গাজীপুরে অপচিকিৎসায় সংকটাপন্ন এক প্রসূতির জীবন

সারাদেশ

স্বদেশবাণী ডেস্ক: গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় লাইফ কেয়ার নামে একটি ক্লিনিকের অপচিকিৎসায় এক প্রসূতির জীবন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার তিনজনকে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলেন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহমুদা আলম, ব্যবস্থাপক মো. হাসান ও মালিক মহিউদ্দিন আহমেদ।

সংকটাপন্ন প্রসূতি সিমু আক্তার ভাংনাহাটি গ্রামের তুষারের স্ত্রী। ভুক্তভোগীর শ্বশুর কফিল উদ্দিন মণ্ডল বলেন, তার পুত্রবধূ সন্তানসম্ভবা হওয়ায় হাসপাতালের লোকজন তাকে ফুসলিয়ে সিজারের জন্য ওই ক্লিনিকে ভর্তি করান।

গত ১ মার্চ অভিযুক্ত গাইনি চিকিৎসক মাহমুদা আলম সিজারিয়ান অপারেশন করলে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তার পুত্রবধূ। অপারেশনের পর থেকেই ক্লিনিকের অব্যবস্থাপনায় তার পুত্রবধূর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে।

পরে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে উঠলে গত ৪ মার্চ তাকে রিলিজ দিয়ে দেয়। রোগী বাড়ি যাওয়ার পর থেকেই ক্ষত স্থান থেকে ব্লিডিং হতে থাকে। এ সময় রোগীর জীবন বাঁচাতে জরুরিভাবে তাকে উত্তরার আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। সেখানেই অপচিকিৎসার বিষয়টি ধরা পড়ে।

বর্তমানে ওই রোগী উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের অধ্যাপক হাফিজা বেগমের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, অপারেশনের পর ওই ক্লিনিকটিতে কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায়নি, তাদের নেই প্রশিক্ষিত সেবক বা সেবিকা। অথচ ক্লিনিকটিতে নিয়মিত নানা ধরনের অস্ত্রোপচার হচ্ছে। তার মতো যাতে আর কেউ এভাবে অপচিকিৎসার শিকার না হয়, সে জন্যই তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্লিনিকটি অনুমোদনহীন। স্থানীয় এক ব্যক্তির ভবন ভাড়া নিয়ে তিন বছর আগে শ্রীপুর পটকা সিনিয়র মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন আহমেদ এ হাসপাতাল গড়ে তুলেন।

দালালের মাধ্যমে ফুসলিয়ে চিকিৎসার জন্য এ ক্লিনিকে রোগী নিয়ে আসেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. হাসানের দাবি, অপারেশনের পর রোগীর সমস্যার বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অবহিত করার পর আমরা তাকে ক্লিনিকে নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছিলাম।

তারা পরে আর আমাদের এখানে না এনে রোগীকে উত্তরায় নিয়ে যান। এ রোগীর চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, অপারেশনের পর যে কোনো রোগীর সমস্যা হতেই পারে।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান বলেন, তিনি এখনও এ বিষয়ে অবহিত নন। তবে খোঁজ নিয়ে তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *