স্বদেশ বাণী ডেস্ক: শিউলি ফোটা শরতের স্নিগ্ধ শারদীয় আবহে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালি সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ধূপের গন্ধ, পঞ্চপ্রদীপের আলো আর ঢাকের তালে সন্ধ্যায় দেবী দুর্গার বোধন হবে। তাই দেশজুড়ে পূজার মণ্ডপে ব্যস্ততা এখন স্বাভাবিক দৃশ্য। সেসব আয়োজনের পুরোভাগেই থাকেন পুরুষ স্বেচ্ছাসেবীরা।
কিন্তু প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলা ভূমি খাগড়াছড়ির আনন্দনগরের ভুবনেশ্বরী কালীমন্দির মণ্ডপে ঢুকতেই দেখা গেল ব্যতিক্রমধর্মী দৃশ্য। এখানে পূজার আয়োজন সফল করার দায়িত্বে আছেন নারীরা। পূজার সব কাজের ভার তাদের ওপর।
এভাবে নারীদের নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি শহরে এর আগে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিষয়টি এখন আনন্দনগর এলাকার লোকজনের মুখে মুখে। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ ছিল এলাকার বাসিন্দাদের মনে। তবে সে সন্দেহ এখন কেটে গেছে। এলাকার ১২১ জন নারী উৎসব সফল করার কাজে রাত-দিন পরিশ্রম করছেন।
জানা গেল, শান্তিনগর ভুবনেশ্বরী কালী মন্দির প্রাঙ্গণের মণ্ডপে ১৮ বছর ধরে দুর্গাপূজা হয়ে আসছিল। কিন্তু এই বছর পূজা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এলাকাবাসী। সেই সময় এলাকার নারীরা এগিয়ে আসেন। পূজা করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি চিত্রা মল্লিক বলেন, এখানে এবার বাজার করা থেকে প্রতিমা নিয়ে আসা পর্যন্ত সব কাজ নারীরাই করেছেন। প্রথম অবস্থায় এলাকার কিছু পুরুষ বিষয়টি মেনে নিতে না পারলেও বাধা দেননি। এমনকি নিরুৎসাহিতও করেননি।
সনাতন সমাজকল্যাণ পরিষদে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তমাল তরুণ দাশ বলেন, আনন্দনগর এলাকায় প্রায় ২৫০টি হিন্দু পরিবারের বসবাস। ভুবনেশ্বরী কালী মন্দির মণ্ডপে প্রতিবছর পূজার আয়োজন করেন তারা। এবার এখনকার নারীরাই পূজার দায়িত্বে। সব কাজ সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করছেন তারা। তারা যদি পুরুষদের সহযোগিতা কামনা করেন তাহলে আমরা সাহায্য করব।
পূজা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মল্লিকা ত্রিপুরা বলেন, মা দুর্গা একজন নারী। তিনি দশভুজা। নারীদের প্রতিটি কাজে প্রথম অবস্থায় বাধা আসবে। তবে সবাইকে এগিয়ে এসে প্রমাণ করতে হবে নারীরা চাইলে সব পারে। ভুবনেশ্বরী কালী মন্দিরের এবার পূজা তার বড় উদাহরণ। সূত্র: পূর্বপশ্চিম।
স্ব.বা/শা