দেশের প্রতিটি পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করাই এখন সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধামুক্ত করেছি। এবার দেশের প্রতিটি পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই।

তিনি বলেন, দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে সরকার এরই মধ্যে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’সহ বেশকিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সরকারের গৃহীত এসব কর্মসূচির ফলে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নেমে এসেছে। আগামীতে এটাকে ১৬ ভাগে নামিয়ে আনতে চাই।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাত দিনব্যাপী পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলা-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভূমিহীনদের ভূমি দিয়েছি। যারা গৃহহারা তাদেরকে ঘর করে দিয়েছি এবং এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। মানুষ যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি।

তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি আমার খামার’-এর মাধ্যমে যেসব সদস্য ১০০ টাকা জমা করবে সরকার তাদেরকে আরও ১০০ টাকা দিচ্ছে। এইভাবে একটা মানুষ দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি। এছাড়া ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সরকার। ইতোমধ্যে বেশকিছু জেলা ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বস্তিতে বসবাস করে তাদের জন্য ঘরে ফেরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

পিকেএসএফের বহুমুখী কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন যেন বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সে নির্দেশনা তাদের দেওয়া হয়েছে। এখন তারা বহুমুখী কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। যেমন- ঋণদান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উৎপাদন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ অনেক বিষয়ের ওপর কাজ করছে তারা।

তিনি বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। খাদ্যের পাশাপাশি এখন আমরা নজর দিয়েছি পুষ্টির দিকে। এ বিষয়ে পিকেএসএফ বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে।

সরকার প্রধান বলেন, বিভিন্ন দেশে গেলে আমাকে প্রশ্ন করা হয়- বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে কি ম্যাজিক রয়েছে? আমি তাদের বলি, আসলে কোনো ম্যাজিক নেই। দেশকে ভালোবাসা, দেশকে জানা এবং দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করা- এটাই হলো মূল ম্যাজিক।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখে না। বাংলাদেশ এখন অনেকের কাছেই বিস্ময়। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ। ২০০৮ সালের সঙ্গে বর্তমান অবস্থা তুলনা করলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমরা আমাদের বাজেট ৭ গুণ বৃদ্ধি করেছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির সুফল এখন গ্রামের মানুষ পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আর কেউ পিছনে টানতে পারবে না। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়ার উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০৭১ সালে যারা এ দেশের শতবর্ষ পালন করবে তারা তখন সত্যি সোনার বাংলা হিসেবে পালন করতে পারবে। একই সঙ্গে তারা পাবে সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহদ রচিত ‘এসো সাম্যের গান গাই’ জাগরণের গান পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শনী ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল এ মেলায় স্থান পেয়েছে। সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *