স্বদেশ বাণী ডেস্ক: সূর্যের আলো তখনো ভালো করে উঠেনি। ততক্ষণে ৮/১০ বছর বয়সী জোবায়ের, ঈমন, রোয়ানা ও শাকিবসহ আরও অনেক শিশু শ্রমিক ইট টানার কাজ শুরু করে দিয়েছে। রোজ পাঁচ থেকে সাত হাজার ইট টানতে পারে তারা। বিনিময়ে পায় ১০০ টাকা।
টাকা দিয়ে কী করবে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে ঈমন বলল টাকা দিয়ে পেপসি খাব। শুধু জোবায়ের, ঈমন, রোয়ানা ও শাকিবসহ তার মতো আরও অনের শিশু কাজ করে গাজীপুরের কালিয়াকৈ উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নে অবস্থিত বড়ইবাড়ী ন্যাশনাল ব্রিকস (বিএনবি) নামের ইটভাটায়। অথচ আইন বলে, ১২ বছরের নিচের কোনো শিশুকে দিয়ে কাজ করানো যাবে না।
সরেজমিনে ওই ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায় ১২ বছরের কম বয়সী এমন অনেক শিশু কাজ করছে দিব্বি। রোজ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ইট তৈরি ও ইট টানার মতো কঠিন কাজ করে থাকে এরা। যে হাতে থাকার কথা ছিল প্রাথমিকের বই তার পরিবর্তে অল্প বয়সী জোবায়ের, ঈমন, শাকিবের মতো শিশু শ্রমিকদের হাতে তুলে নিতে হচ্ছে ইট তৈরির মতো ভারী কাজ। শুধু ছেলে শ্রমিক নয় রয়েছে কিছু মেয়ে শ্রমিকও যাদের বয়স ১২ এর নিচে।
ইট পরিবহনের মতো এমন ভারী কাজ করতে গিয়ে অনেক শিশুকেই নানা দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। অনেক সময় মারাত্মক আহত হতে হয়। আহত বা অসুস্থ হলেও তাদের নেই কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা, খোঁজ নেয় না ভাটা মালিক পক্ষ।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কালিয়াকৈর উপজেলার শাখার সভাপতি মো. শাহজাহান মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, শিশুশ্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যারা শিশুশ্রমের সাথে সম্পৃক্ত আছে তারা যেই হক না কেন অবশ্যই তাদের উপর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষ থেকে এটাই আমাদের দাবি।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমীন ঢাকা টাইমসকে বলেন, যদি ইটভাটার বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ থাকে তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যদি কোনো ইটভাটায় এমন শিশুশ্রম দেখা যায় তবে সেই ভাটার বিরুদ্ধে দ্রুত অ্যাকশনে যাওয়া হবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সূত্র: ঢাকা টাইমস।
স্ব.বা/শা