স্টাফ রিপোর্টার: উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রায় পাঁচ বছর পর আগামীকাল রোববার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে উচ্ছ্বাস যেমন আছে, পাশাপাশি এই সম্মেলনে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নেতৃত্ব বাছাই করতে পারবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তাও।
কাউন্সিলরদের ভোটে, সমঝোতার মাধ্যমে, নাকি শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে আসবে কমিটি—এ নিয়ে দোলাচলে আছেন সবাই।
এদিকে, শেষ মুহুর্তে দলের পদ পেতে পদপ্রত্যাশীরা তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছেন। পুরনো নেতৃত্বের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরছেন তাঁরা। তবে শেষ পর্যন্ত সম্মেলন সুন্দরভাবে শেষ হবে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
রাজশাহীর মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। প্রধান অতিথি থাকবেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরই মধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। এছাড়াও সম্মেলনের আশপাশ ছেয়ে গেছে পদপ্রত্যাশীদের ব্যানার-ফেস্টুনে।
এর আগে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর। ওই সম্মেলনে শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে চলে যান কেন্দ্রীয় নেতারা। এর প্রায় এক বছর পর পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
কারা আসছেন নতুন কমিটিতে?
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এখন একটাই প্রশ্ন, কারা আসছেন নতুন কমিটিতে? বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন—এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। নতুন নেতৃত্ব, নাকি আগের চেনা মুখই থাকছে, আংশিক পরিবর্তন নাকি মিলেমেশে কমিটি? যদিও কেন্দ্রীয় নেতারা বার বার বলেছেন‘সম্মেলনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হবে। কমিটিতে অনুপ্রবেশকারী, সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের স্থান দেওয়া হবে না।’
জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় এসেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের তিনবারের এমপি ও জেলার বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এনামুল হক, রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের তিনবারের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক এমপি আক্তার জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। সভাপতি পদ প্রত্যাশী হিসেবে এইসব নেতাদের পক্ষে বিভিন্নভাবে প্রচার চালাচ্ছেন তাদের সমর্থকরা।
সাধারণ সম্পাদক পদে এবার আলোচনায় রয়েছেন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের দুইবারের এমপি আয়েন উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দীন লাভলু, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি রবিউল আলম বাবু, বাগমারা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, সংরক্ষিত আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবিদা আনজুম মিতা এমপি এবং জেলা মহিলা লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে এদের পক্ষে প্রচার চালছে বিভিন্নভাবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সূত্রমতে, ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আর পুর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হয় এক বছর পর। ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ৭১ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেন। তবে অনুমোদিত কমিটি জেলায় পাঠানো হয় ৭ ডিসেম্বর। এর আগে সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। সূত্র: বাংলার জনপদ।
স্ব.বা/শা