একনেকে পাশ হলো রাজশাহীবাসীর সপ্নের মেগা প্রকল্প, পাল্টে যাবে নগরীর চিত্র

বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজশাহী শহরকে আধুনিক শহর হিসেবে গোড়ে তুলতে তৈরী করা হয়েছে মাস্টারপ্ল্যান। আর এ মাস্টারপ্ল্যানকে জাতীয় নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় অনুমোদন দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ মেঘা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাজশাহীবাসীর সপ্নের মেগা প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে পাশ হওয়া ২ হাজার ৯৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকার এই মেগা প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার ফলে পাল্টে যাবে নগরীর চিত্র। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০৭ টি ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে গোড়ে তোলা হবে রাজশাহী শহরকে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজশাহীর উন্নয়নে তৈরি করা হয়েছিলো এই উন্নয়ন প্রকল্প। এর পূর্বে কখোনো এতো বড় প্রকল্প আসেনি রাসিকে।
প্রস্তুতকৃত মেগা প্রকল্পটি গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকল্প যাচাই কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়েছিলো। আর সেটিই রাজশাহীবাসীর জন্য মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে অনুমোদন দিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখন শুধু অর্থ ছাড় হলেই দ্রæত গতিতে শুরু হবে নগর সাজানোর কাজ।

গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, প্রকল্পটি একনেকে পাশ হয়েছে এখন অর্থ বরাদ্দ পেলেই এই নগরীকে ঢেলে সাজাতে মাঠে নামবো আমরা। আশা করছি দ্রæত সময়ের মধ্যে অর্থ বরাদ্দও মিলবে।’
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি আমরা। আমাদের সন্তানদের জন্য আগামীর বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন কাজ করে যাচ্ছেন। এ কারণে যেসব রাস্তায় এখনো যানজট শুরু হয়নি, কিন্তু ভবিশ্যতের কথা বিবেচনা করে আমরা সেইসব রাস্তাগুলো প্রশস্তকরণ কাজ হাতে নিয়েছি।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর দেওয়া তথ্যমতে নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনে গুরুত্বপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ওভারপাস নির্মাণ, ১৩.১০ কিলোমিটার অযান্ত্রিক যানবাহন লেনসহ চারলেন সড়ক নির্মাণ করা হবে। ৯৯.৫৬ কিলোমিটারের ৩৬৮টি কার্পেটিং সড়ক নির্মাণ, ১০৬.৭৬ কিলোমিটারের ২৫৮টি কার্পেটিং সড়ক পুনঃনির্মাণ করা হবে, সিমেন্ট কনক্রিট সড়ক নির্মাণ করা হবে এক হাজার ৮ শ ৭টি যার দৈর্ঘ্য ১৮৫.৩০ কিলোমিটার। ৩০.৫৬ কিলোমিটারের ৫৩ টি কার্পেটিং সড়ক প্রশস্তকরনের কাজ।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরীতে ৬টি ফ্লাইওভার নির্মাণ, বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ফুটওভার বিজ নির্মাণ, ৫০টি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নির্মাণ, একটি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার নির্মাণ, ৩০টি গণশৌচাগার নির্মাণসহ গোরস্থান ও জলাশয়ের ধারে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ প্রায় ১০৭ টি ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে।

এছাড়াও সিমেন্ট কনক্রিট সড়ক পুনঃনির্মাণ করা হবে ৫৯৮টি যার দৈর্ঘ্য ৭৯.৬১ কিলোমিটার, ৬টি প্রাইমারি নর্দমা নির্মাণ করা হবে যার দৈর্ঘ্য হবে ৪.৫১ কিলোমিটার, ১৪৯টি সেকেন্ডারি নর্দমা নির্মাণ করা হবে যার দৈর্ঘ্য হবে ৫৯ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার, ফুটপাথ নির্মাণ করা হবে ৪১.৯২ কিলোমিটার, গোরস্থান ও জলাশয়ের ধারে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে ৬২.০৭ কিলোমিটার, জলাশয়সমূহে সৌন্দর্যবর্ধনমূলক কাঠামো নির্মাণ করা হবে ১৯টি, গণশৌচাগার নির্মাণ করা হবে ৩০টি, পার্ক নির্মাণ করা হবে ৪টি, সহ ৬৯টি ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। আর এসব বিশাল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই পাল্টে যাবে রাজশাহীর চিত্র।

এদিকে একনেকে রাসিকের বিশাল প্রকল্প পাশ হওয়ায় আনন্দ বইছে রাজশাহীবাসীর মধ্যে। কেও কেও বলছেন, মেয়র লিটনের প্রচেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহীর প্রতি সূ-দৃষ্টি থাকার কারনে এই বিশাল প্রকল্প অনুমোদন পেলো।

এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাসিকের যে মেগা প্রকল্প অনুমোদন দিলেন তাতে রাজশাহীবাসীর প্রতি তার ভালোবাসা ও উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গির বহি:প্রকাশ।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *