নাটোর প্রতিনিধিঃ নাটোরের বাগাতিপাড়ায় দলিল লেখককে কান ধরে দাঁড় করে রাখার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার নাহিদুজ্জামনের বিরুদ্ধে। এরই প্রতিবাদে সাব-রেজিষ্ট্রারের অপসারনের দাবিতে দুই সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন উপজেলা দলিল লেখক সমিতি। তবে এমন অভিযোগ বিত্তিহীন এবং বানোয়াট বলে দাবী করেছেন নাহিদুজ্জামন।
দলিল লেখকদের অভিযোগ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার নাহিদুজ্জামান বিভিন্ন সময় তার এজলাসের মধ্যে দলিল লেখকদেরকে অপমান অপদস্ত করেন এছাড়া দলিল ছিড়ে ফেলাসহ দলিল লেখককে কান ধরে দাঁড়িয়ে রাখার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এমন খারাপ আচরনের প্রতিবাদে সাব-রেজিষ্ট্রারকে বাগাতিপাড়া থেকে অপসারণের দাবিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারী থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন উপজেলা দলিল লেখক সমিতির ৯০ জন সদস্য। এছাড়া জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ এবং সেই অনুলিপি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়, স্থানীয় সাংসদ এবং মহা পরিদর্শক নিবন্ধন কে অনুলিপি পাঠিয়েছেন তারা।
ভুক্তভুগী দলিল লেখক শাহীন আলী বলেন, দলিলে ভুল আছে এমন অভিযোগে সাব-রেজিষ্ট্রার নাহিদুজ্জামান এজলাসের মধ্যে সকলের সামনে তাকে লাঠি ছুড়ে মারে এবং কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। সিনিয়র দলিল লেখক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এজলাসে দলিল নিয়ে গেলে প্রয়োজনীয় একটি কাগজ কম থাকায় সাব-রেজিষ্ট্রার তাকে থাপ্পড় মারতে উঠে এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। দলিল লেখক জিন্নাত আলী ও আবুবক্কর সিদ্দিক দুঃখের সাথে অভিযোগ করে বলেন, সাব-রেজিষ্ট্রার এখানে আসার পর থেকেই প্রবীন দলিল লেখকদের ছোট খাটো ভুল হলেই মারমুখি আচরন করে। দলিল লেখক মশিউর রহমান বলেন, দলিল সম্পাদন করতে এজলাসে গেলে দলিলে ক্রটি আছে বলে ক্ষিপ্ত হয়ে দলিল কলম দিয়ে কাটাকাটি করেন এবং আরও ক্ষিপ্ত হয়ে দলিলটি ছিড়ে ফেলেন।
উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আরশাদ আলী এবং সাধারন সম্পাদক আনিসুর রহমান বলেন, সাব-রেজিষ্ট্রারের মারমুখি আচরন, দলিল লেখকদের অপমান অপদস্ত করায় তার অপসারনের দাবিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারী থেকে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। বর্তমান সাব-রেজিষ্ট্রারের কাছে তারা কোন দলিল সম্পাদন করবেন না। এছাড়া জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এবং সেই অনুলিপি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়, স্থানীয় সাংসদ এবং মহা পরিদর্শক নিবন্ধন কে অনুলিপি পাঠিয়েছেন।
তবে এমন অভিযোগ বিত্তিহীন এবং বানোয়াট বলে দাবী করে উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার নাহিদুজ্জামন বলেন দলিল নির্ধারিত মূল্যে সম্পাদ করতে বলায় দলিল লিখকদের সাথে তার কিছু মতপার্থক্য চলছে। সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারি নির্ধারিত যে ফি নির্ধারন ছিল বর্তমানে নতুন গেজেটে সেটা কমে এসেছে। সে ব্যাপারে দলিল লেখকদের অবগত করতে গেলে তারা সেটা মানতে চাইনা। তিনি আরও বলেন আমি চুপ থাকলে তারা দলিল দিবে আর চুপ না থাকলে আমার কাছে তারা দলিল দিবেননা।
এমন পরিস্থিতিতে সেবা নিতে আসা গ্রহিতারা দলিল সম্পাদন করতে এসে যেমন ভোগান্তিতে পড়ছেন তেমনি রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
স্ব.বা/বা