আল জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে সরকারকে চ্যালেঞ্জ ভিপি নুরের

রাজনীতি

স্বদেশবাণী ডেস্ক: আল জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, আমরা ধরে নিলাম আল জাজিরার প্রতিবেদন পুরোপুরি সত্য নয়। যদি সরকার প্রমাণ করতে পারে এই প্রতিবেদনটি পুরোপুরি মিথ্যা তাহলে আমি জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, স্বেচ্ছায় ফাঁসি বরণ করব৷

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং লেখক মোস্তাক আহম্মেদের মুক্তি এবং নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়৷

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের সভাপতি সৈকত আরিফের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য কবি ও লেখক রাখাল রাহা, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, বৃহত্তর চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০ মাস কারাভোগকারী ইমতিয়াজ আহমেদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দেশকে নিয়ে ভাবছেন কি না- বুঝতে পারছেন না ভিপি নুর।  কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যেই নির্বাচনকে সারা বিশ্ব এবং দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে সেই নির্বাচনকে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই সরকারে অকুণ্ঠ বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছেন৷

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আল জাজিরার প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে৷এই বিবৃতির উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দিহান ভিপি নুর৷

শিক্ষকদের ‘অনুরোধ’ করে তিনি বলেন, আপনারা কোন উদ্দেশ্যে বিবৃতিটি দিয়েছেন। বিবেকের তাড়নায় বিবৃতিটি দিয়েছেন নাকি কেউ হলের প্রভোস্ট হবেন, কেউ ভাইস চ্যান্সেলর বা প্রক্টর হবেন এই মোহ থেকে বিবৃতি দিয়েছেন৷

বাংলাদেশ ‘মাফিয়া রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছে দাবি করে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, আজ আমরা কথা বলছি তাই আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার পলাশকেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঠিক এভাবেই বিভিন্ন আইন করে, মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে, ‘গুণ্ডাতন্ত্রে’র মাধ্যমে এদেশকে মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে।

বাংলাদেশকে ‘মাফিয়া’ মুক্ত করতে নুর তার সহকর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই সংগ্রাম করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজকে আমরা একত্রিত হয়েছি, হয়তো পরবর্তীতে একত্রিত নাও হতে পারি। তাই এই মাফিয়াদের বিরুদ্ধে যখনই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে তখনই আপনার ঝাঁপিয়ে পড়বেন।

এর আগে সমাবেশে বক্তব্য দেন রাষ্ট্র চিন্তার সদস্য রাখাল রাহা। তিনি বলেন, ৫৭ ধারা নামে আগে একটি আইন ছিল। সেই আইনের বিরুদ্ধে আমরা অনেক কথা বলেছি। সেই  ৫৭ ধারা বাতিল করার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে অনেকগুলো ধারা আনা হয় যেগুলো ৫৭ ধারার চেয়েও অনেক বেশি নিপীড়নকারী এবং কাউকে হয়রানি করার জন্য অনেক বেশি শক্তিশালী।

তিনি বলেন, সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে কেউ যদি এই নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে সক্ষমও হয় তাহলে রাষ্ট্রের বিদ্যমান ক্ষমতা কাঠামো ব্যবহার করে এর চেয়ে জটিল, কঠিন, নিপীড়নমূলক আরেকটি আইন তারা পরদিনই বিল আকারে সংসদে তুলে পাস করে দিতে পারবে। এই রাষ্ট্রের ক্ষমতা কাঠামোটাই এরকম। সুতরাং এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং ক্ষমতা কাঠামো পরিবর্তন করলে হবে না, এটি সংস্কার করতে হবে৷ তা না হলে এই রাষ্ট্রে আমাদের এবং আমাদের সন্তাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *