বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে যা বললেন মিঠুন-প্রসেনজিৎ

আন্তর্জাতিক

স্বদেশবাণী ডেস্ক: ভারতের শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়।  বহু কিংবদন্তী অভিনেতা-অভিনেত্রীর অভিনয় জীবনের শেষ দিকে এসে দলে ভিড়ে মনোনয়ন নিয়ে মন্ত্রী-এমপি হওয়ার নজির রয়েছে।  আবার অনেকে অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতি করে যাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় নায়িকা নুসরাত, মিমি চক্রবর্তী তাদের মধ্যে অন্যতম।  আবার প্রয়াত তাপস পালও রাজনীতি করে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন।  সম্প্রতি জনপ্রিয় অভিনেতা রুদ্রনীল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।  এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে টালিউড নায়ক সোহম রুদ্রনীলকে ইন্ডাস্ট্রিতে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।

রুদ্রনীল-সোহমের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গন যখন উত্তাল, তখন শোনা গেল আরেক খবর।  টালিউডের দুই কিংবদন্তি প্রসেনজিৎ ও মিঠুন চক্রবর্তীর রাজনীতিতে নাম লেখানোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এমনও খবরও বেরিয়েছে যে, কলকাতার শক্তিমান অভিনেতা প্রসেনজিৎ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।  তাকে দলে ভেড়াতে চেষ্টা করছে মোদি-অমিত শাহর বিজেপি। আবার মিঠুন চক্রবর্তীও তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে আরএসএসপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে টালিউড অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীরও সাক্ষাৎ হয়। মিঠুনের মুম্বাইয়ের বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক সারেন ভাগবত। তবে বৈঠকের বিষয়ে আলোকপাত করেনি কোনো পক্ষই।

মিঠুন শুধু বলেছেন, তার সঙ্গে ভাগবতের একটা ‘আধ্যাত্মিক সংযোগ’ রয়েছে।  কিন্তু পাশাপাশিই তিনি জানিয়েছেন, এখনও ওই সাক্ষাতে কোনো রাজনৈতিক জল্পনার অবকাশ নেই।

একই দিন টালিউডের আরও এক সুপারস্টারের বাড়িতে বিজেপির প্রতিনিধির যাওয়া নিয়ে জল্পনা দৃঢ় হয়।

সরস্বতী পূজার দিন প্রসেনজিতের দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে গিয়ে সস্ত্রীক তার সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপির সংগঠক এবং অমিত শাহকে নিয়ে বইয়ের লেখক অনির্বাণ।

অনির্বাণ ওই সাক্ষাৎকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলে বর্ণনা করেছেন।  অনির্বাণ বিজেপির কোনো পদে না থাকলেও দিল্লিতে থেকে সংগঠনের কাজ করেন।

তিনি প্রসেনজিতের বাড়িতে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রসেনজিৎকে ধন্যবাদ জানাতেই তার বাড়িতে গিয়েছিলেন । অনির্বাণের ভাষ্য– ‘ওই অনুষ্ঠানে আসার জন্য ওকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলাম।  বাঙলার সংস্কৃতিকে কীভাবে অক্ষুণ্ণ রাখা যায় তা নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে।

অনির্বাণ আরও বলেন, ‘এটি আমাদের সম্পর্ক অভিযানের অংশ। যেমন অমিত শাহ কলকাতায় এসে অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়েছিলেন।’

তবে প্রসেনজিৎ বিজেপিতে যাওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছি না। অনির্বাণের স্ত্রী ও কন্যা আমার ভক্ত। ওরা সে কারণেই দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি আরও বলেন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যদি রাজনীতিতে যোগ দেন, তা হলে পাঁচ বছর ধরে ভেবে বুক ফুলিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেবে। লুকিয়ে-চুরিয়ে নয়। কিন্তু প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কখনও রাজনীতিতে যাবে না। এটি আপনারা লিখে নিতে পারেন!’

একই কথা বলেছেন মিঠুনও। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কোনো ‘রাজনৈতিক সংযোগ’-এর কথা তিনি ভাবছেন না। তবে ইতোমধ্যে খবর রটেছে যে, সরাসরি যোগ না দিলেও মিঠুন পশ্চিমবঙ্গের ভোটে বিজেপির হয়ে প্রচারে নামলেও নামতে পারেন। একদা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন যদি সত্যিই বিজেপির হয়ে ভোটের প্রচারে নামেন, তা হলে তা ‘চমক’ তো হবে বটেই!

সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যারপরনাই বিপর্যস্ত ছিলেন মিঠুন। প্রদেয় অর্থ ফিরিয়ে দিয়ে সেই যাত্রায় বেঁচেছিলেন মিঠুন। একই সঙ্গে রাজনীতিতে ‘বীতশ্রদ্ধ’ হয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার এমপি পদও। তিনিই যদি বিজেপির হয়ে ভোটের প্রচারে নামেন, তা হলে সেটি রাজনীতির চমকই হয়ে থাকবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *