স্বদেশবাণী ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের গাড়ি থাকবে কেন? এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর।
তিনি বলেন, এটাতো কোনো ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বলবো ক্যাম্পাসে পুলিশের গাড়ি দেখলে আগুন ধরিয়ে দেবেন। প্রয়োজনে নিজেকে হুকুমের আসামি বানানোর অনুমতিও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, আটককৃত ছাত্রদের মুক্তিসহ চার দফা দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আয়োজনে এ কর্মসূচি কয়েকশত শিক্ষার্থী অংশ নেন।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে নুর বলেন, পুলিশকে আজ জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। জোর-জুলুম করে এই অবৈধ সরকার আর বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না।
পুলিশ তো আমাদের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত রয়েছে। কিন্তু এখন আমরা কি দেখছি? ছাত্রলীগ, যুবলীগের মতো আচরণ করছে পুলিশ।
কুখ্যাত পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এখনো দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড ওয়ার্কশপ বিভাগের উপ-কমিশনার হিসেবে। তার পদোন্নতি হচ্ছে। হারুনের মতো পুলিশকে সরকার নিজের প্রয়োজনে টিকিয়ে রেখেছে।
রমনা জোনের এডিসি হারুনকে উদ্দেশ্য করে ছাত্র অধিকার পরিষদের এই যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, যেকোন ছাত্র আন্দোলনে আগ্রাসী ভূমিকায় থাকেন রমনা জোনের এডিসি হারুন। তিনি নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
সেদিন কীভাবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ডাকসুর ভিপি হিসেবে এডিসি হারুণকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। তিনি পুলিশ কর্মকর্তা নয় ছাত্রলীগের গুণ্ডার মত আচরণ করছেন।
মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার। আসলেই পুলিশ কি জনতার? প্রশ্ন রাখেন তিনি। সবগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে আজ দলীয় দাসে পরিণত করা হয়েছে। এই দায় বিনাভোটের ফ্যাসিবাদী সরকারের।
ভিপি নুর বলেন, যেকোনো সংকটে সারা দেশের মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। এক সময় এমপি-মন্ত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে পায়ের ধূলো নিতে। আর এখন শিক্ষককেরা পদের জন্য এমপি-মন্ত্রীদের কাছে ধন্না দেয়। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। দলীয়করণ করতে করতে রাষ্ট্রের সকল কাঠামোকে আজকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যু নিয়ে তিনি বলেন, লেখক মুশতাককে হত্যা করা হয়ছে। কারাগারের মতো জায়গায় একজন লেখককে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। আপনারা জানেন তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন না। তাকে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আমরা শুধু বলছি না। আন্তর্জাতিক ১৩টি প্রেস বলছে মুশতাক হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত করতে হবে।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান, ঢাবি শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাদের মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।