পাগল সেজে ঘুরছেন ডাবল মার্ডারের আসামি!

আন্তর্জাতিক

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  জোড়া খুনের দায়ে অভিযুক্ত। পুলিশও হন্যে হয়ে তাকে খুঁজছে। কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিতে কলকাতার রাস্তায় পাগল বেশে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন!

অবশেষে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে টালা থানার টালা পার্ক থেকে জোড়া খুনে অভিযুক্ত নেত্তাবুদ্দিন খানকে গ্রেফতার করা হয়। খবর আনন্দাবাজার।

শনিবার তাকে বারুইপুর আদালতে তোলা হলে তার ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

নেত্তাবুদ্দিন জানিয়েছেন পাওনা টাকা নিয়ে ঝামেলার জেরেই মুজিবর মোল্লাকে খুন করেছেন তিনি। আর গোটা ঘটনাটি তার ভাইপো রবিউল খান দেখে ফেলায় তাকেও খুন করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড়ের কাশীপুর থানার পূর্ব রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা নেত্তাবুদ্দিনের বাড়িতে প্রায়ই মদ-গাঁজা ও জুয়ার আসর বসত।

অভিযোগ, জুয়ার টাকা নিয়ে সেখানেই তার এক আত্মীয় মুজিবর ওরফে লাল্টুর সঙ্গে গণ্ডগোল হয়। বার বার তার কাছে টাকা চেয়েও পাননি লাল্টু।

শেষে গত ২৭ জুন লাল্টুকে টাকা দেওয়ার নাম করে নেত্তাবুদ্দিন নিজের বাড়িতে ডেকে এনে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। তার স্ত্রী ওহিদা বিবিও এ কাজে সাহায্য করেন। এমনকি পুরো ঘটনাটি দেখে ফেলায় নেত্তাবুদ্দিনের ভাইপো রবিউলকেও হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর স্বামীকে বাড়ি থেকে পালাতে সাহায্য করে ওহিদা। এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় চাইতে গেলে নেত্তাবুদ্দিনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পর তিনি ওই বাড়ির উঠোনে শুকোতে দেওয়া মেয়েদের একটি রাতপোশাক পরে নেন এবং ওড়নায় মুখ ঢেকে পালান। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে সেই ছবি দেখতে পায় পুলিশ।
এর পর নেত্তাবুদ্দিন পৌঁছায় শিয়ালদহে। কিন্তু হাতে টাকাপয়সা বেশি না থাকায় খুব দূরে যেতে পারেননি তিনি। তাই শহরের রাস্তাতেই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মতো আচরণ করতে থাকেন। সেখানে কদিন ধরে পাগলের অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। লোকের কাছে হাত পেতে খেতেন আর রাতে টালা পার্কের ভেতরে ভবঘুরেদের সঙ্গে বেঞ্চের ওপরেই শুয়ে থাকতেন।

সম্প্রতি ভাঙড়ের এক নারী ওই এলাকায় কাজে গিয়ে নেত্তাবুদ্দিনকে দেখে চিনে ফেলেন। তিনি এক আত্মীয়কে বিষয়টি জানান। সেখান থেকে খবর যায় পুলিশে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কাশীপুর থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে ঘুমন্ত ভবঘুরেদের মধ্যে থেকে নেত্তাবুদ্দিনকে আটক করে।

বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, দুজনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ভবঘুরে সেজে কলকাতায় লুকিয়ে ছিলেন। বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করেছিল নেত্তাবুদ্দিনের স্ত্রী ওহিদাকে। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *