মান্দায় প্লাবিত ২০ গ্রাম,পানি বন্দি ৫০ হাজার মানুষ

রাজশাহী লীড
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জেলার আত্রাই  নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মান্দা উপজেলার আত্রাই নদীর ডান তীরে চকবালু নামক স্থানে প্রায় ১০০ ফুট বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার আত্রাই নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানির চাপ বাড়ায় এ উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের চকবালু নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রসাদপুর-জোকাহাট যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।  এতে অন্তত ২০-২৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
শত শত হেক্টর জমির ধান, শাক-সবজি ও পাটসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে অসংখ্য মানুষ সড়ক ও বাঁধের ওপর আশ্রয় নিচ্ছেন।
এছাড়া মদনচক, উত্তর লক্ষ্মীরামপুর, বানডুবি, বাগাতিপাড়া, জোতবাজার, গোয়ালমান্দা, পারনুরুল্লাবাদ, কালিকাপুর, কামারকুড়ি, ছোট বেলালদহ, খুদিয়াডাঙ্গা, বুড়িদহ, পশ্চিম নুরুল্লাবাদ, নিখিরাপাড়া, করাতিপাড়া, জোকাহাট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, চকরামপুর, কয়লাবাড়ি, বটতলা বাজার, দ্বারিয়াপুর বেড়িবাঁধ, খুদিয়াডাঙ্গা পূর্বপাড়াসহ অন্তত ২০-২৫ টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন। এসব এলাকার মানুষ নিরাপদে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন।
মান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার গোলাম ফারুক বলেন, প্রাথমিকভাবে বন্যায় ৮২৯ হেক্টর জমির আউশ, ৬০ হেক্টরের আমন এবং ৭৫০ হেক্টরের শাকসবজি ডুবে গেছে। পানির চাপ বাড়তে থাকলে আরও ফসলি জমি নিমজ্জিত হবে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, ১৫-২০ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা আছে। বন্যা কবলিতদের আশ্রয়ের জন্য স্কুল-কলেজ খোলা রাখা হয়েছে।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সার্বক্ষণিক তদারকির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মেডিকেল টিম গঠনসহ সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আজ (বুথবার) দুপুর নাগাদ সরকারি শুকনো খাবার বন্যা কবলিত এলাকায় পৌঁছানো হবে বলে জানান তিনি।
নওগাঁ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, পানির তোড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৫০ ফুট ভেঙে গেছে। পানির চাপ বেশি থাকায় ভাঙা অংশ এখনই মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। পাউবোর টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *