স্টাফ রিপোর্টার: চলতি বর্ষাকালেও রাজশাহীতে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে বিদ্যুতের বিভ্রাট। তাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে রাজশাহীতে নর্দান পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) অফিস ঘেরাও করেছে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। এ সময় সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভও করেন।
শনিবার সকালে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় নেসকো কর্মকর্তাদের হুশিয়ারি দিয়ে সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাট কোনোভাবেই কাটছে না। কিন্তু মাস শেষে আসছে ভৌতিক বিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত এবং ভৌতিক বিলের মাধ্যমে মানুষের পকেট কাটা বন্ধ করতে হবে।
এ জন্য এক মাস সময় বেঁধে দিয়ে তারা বলেন, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রাজশাহীতে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থ হলে নেসকো অফিস অবরুদ্ধ এবং বিদ্যুৎ বিল প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরে তারা নেসকোর রাজশাহীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করেন করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাজশাহীতে নেসকো প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে সকল স্তরের মানুষকে নিয়ে মতবিনিময়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ শুনে আশ্বস্ত করা হয়েছিলো নগরবাসী সঠিকভাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা পাবেন। তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় শুরু থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহে নেসকো ব্যর্থ হয়েছে। বিগত সময়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থাকাকালীন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেয়েছেন নগরবাসী। অথচ এখন দিনে রাতে সমান তালে চলছে বিদ্যুতের লুকোচুরি। এতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং অন্যদিকে মাস শেষে ভৌতিক বিলের কারণে এখন নাভিশ্বাস উঠেছে গ্রাহকদের। কারো কারো বিল চার থেকে পাঁচ গুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, মিটার রিডিং না করেই আয় বৃদ্ধি দেখাতে ঘরে বসে যা ইচ্ছে বিল করে অর্থ আদায় করছে নেসকো।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন। সেই তুলানায় রাজশাহীতেও চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ আছে। তবে নেসকো কর্মকর্তাদের চরম উদাসিনতায় রাজশাহীবাসী বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ করলে সমাধান না দিয়ে চরম খারাপ আচরণ করা হয় গ্রাহকদের সঙ্গে। সামান্য খারাপ আবহাওয়া ও বৃষ্টি পড়লে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে নগরবাসী চরম দূর্ভোগে পোহাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতসহ সকল প্রতিষ্ঠানের কাজে সমস্যা হচ্ছে। এ অঞ্চলে ভারী বড় কলকারখানা নেই। অধিকাংশ মানুষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করেই জীবিকা নির্বাহ করে। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সকল ব্যবসা বানিজ্যে মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি ভৌতিক বিলসহ সুক্ষ কারচুপির মাধ্যমে গত জুন মাসে শুরু হয়েছে বাড়তি বিলের নতুন সমস্যা।
এর আগে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন- রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলী, সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সহ-সভাপতি হারুনার রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, মঞ্জুর হাসান মিঠু, মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান, প্রকৌশলী খাজা তারেক, নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম, ওয়েব রাজশাহীর সভাপতি আঞ্জুমান আরা লিপি, নারীনেত্রী আকলিমা খাতুন লিমা, সমাজসেবক গোলাম নবী রনি, জেলা লোকমোর্চার সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া, যুবনেতা জাহিদ হোসেন, আনসার আলী বাবু, হাসান আলী সরকার প্রমুখ।