ভারত পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে ক্ষুধার্ত কম

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক : ক্ষুধা মেটানোর সক্ষমতায় ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্ব ক্ষুধা সূচক ২০২১ এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই সূচকে দেখা যায় ১১৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৭৬, পাকিস্তান ৯২ ও ভারত ১০১ নম্বর অবস্থানে রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপালও বাংলাদেশের সমানসংখ্যক ৭৬ পয়েন্ট পেয়েছে। এদিকে, ২০৩০-এর ক্ষুধামুক্ত বিশ্বের লক্ষ্য থেকে ছিটকে পড়েছে জাতিসংঘ। যুদ্ধ-সংঘাত, করোনা মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ অবস্থা হয়েছে। দ্য হিন্দু, ডয়েচে ভেলে।

গত বছর, শিশু মৃত্যুর হারে ভারত ছিল সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে। শিশু মৃত্যু হলো এমন একটি অবস্থা তীব্র অপুষ্টিকে প্রতিফলিত করে।

ক্ষুধা সূচকে ভারতের পেছনে মাত্র ১৫ দেশ রয়েছে। এসব দেশের বেশিরভাগই আফ্রিকার দরিদ্র দেশ। ভারতে পেছনে থাকা দেশগুলো হলো-পাপুয়া নিউগিনি, আফগানিস্তান, নাইজেরিয়া, কঙ্গো, মোজাম্বিক, সিয়েরা লিওন, পূর্ব তিমুর, হাইতি, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, গণতান্ত্রিক কঙ্গে প্রজাতন্ত্র, চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইয়েমেন ও সোমালিয়া।

গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) জানিয়েছে, বিশ্বের ৪৭টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কম ক্ষুধা সূচক ইনডেক্স উত্তরণে ব্যর্থ হবে।

এ ইনডেক্সে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। জিএইচআইতে এ দেশটির পয়েন্ট খুব কম, যা উদ্বেগজনক। আরও ৫টি দেশের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

সে দেশগুলো হলো-গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, মাদাগাস্কার ও ইয়েমেন। জিএইচআই একাধিক সংকটের মোকাবিলায় বিশ্বে ক্ষুধা পরিস্থিতির দিকে নির্দেশ করে।

২০৩০ সালের মধ্যে জিরো হাঙ্গারের দিকে অগ্রগতির লক্ষ থাকলেও এটা ইতোমধ্যেই অনেক ধীর, স্থবির বা এমনকি বিপরীত হওয়ার লক্ষণ দেখাচ্ছে।

২০২০ সালের বিশ্ব ক্ষুধাসূচকে ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭৫তম। ২০১৯ সালে একই সূচকে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৮। এ সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ছিল ৮৬তম।

মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষুধা বাড়ছে : বছরের পর বছর চিন্তাভাবনার পর ২০১৫ সালে জাতিসংঘ একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে।

এ লক্ষ্য অনুযায়ী অপুষ্টির সংখ্যা কমিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়। কিন্তু যুদ্ধ-সংঘাত, করোনা মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব হবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ২০৩০ সালে লক্ষ্যকে অর্জনযোগ্য বলে মনে করেছিল। কিন্তু সেটা এখন আর সম্ভব নয়। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

বেসরকারি সংস্থা ওয়েলথহাঙ্গার লাইফ ও কনসার্ন ওয়ার্লল্ড ওয়াইড জানিয়েছে, গত দুই বছরে অর্থনৈতিক পতনের কারণে সারা বিশ্বে অনেক মানুষ নতুন করে ক্ষুধার্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা যায়, গত বছর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়নি এমন মানুষের সংখ্যা ৩২ কোটি থেকে বেড়ে ২৪০ কোটি হয়েছে, যা বিশ্বের জনসংখ্যায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এ বৃদ্ধি আগের পাঁচ বছরের সমান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *