জমি হারিয়ে জঙ্গলে ১৭ বছর, ফিরতে চান নিজের ঘরে

আন্তর্জাতিক

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  গ্রামে দেড় একরের চাষের জমির জন্য ব্যাংক থেকে ৪০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিলেন কর্নাটকের চন্দ্রশেখর। ২০০৩ সালে ব্যাংক থেকে তিনি লোন নেন। কিন্তু সময় মতো তা পরিশোধ করতে পারেননি। এরফলে তার জায়গা বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংক।  সেই কষ্টে ঘর ছাড়েন তিনি। সঙ্গে নিয়ে যান নিজের অ্যাম্বাসাডর ও একটি সাইকেল। প্রথমে বোনের বাড়ি উঠলেও পরে পারিবারিক বিবাদের কারণে সেখান থেকে কন্নড় জেলার একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। তারপর থেকেই সেখানে কাটিয়ে দেন ১৭ বছর।

জঙ্গলে সম্পত্তি বলতে তার একটি অ্যাম্বাসাডর আর একটি সাইকেল। অ্যাম্বাসাডরের ওপর কালো প্লাস্টিক দিয়ে ছাউনি করে বানিয়েছেন নিজের ঘর। জঙ্গলের সাপ, বিচ্ছুসহ হিংস্র প্রাণীরাও তাকে যেন আপন করে নিয়েছে।  তাই ১৭ বছরে একবারও হামলার শিকার হতে হয়নি তাকে।

বন বিভাগের কোনো কর্মী তাকে জঙ্গলে থাকতে বাধা দেয়নি। কারণ, চন্দ্রশেখর কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করেন না। পেট চালানোর জন্য জঙ্গলের শুকিয়ে যাওয়া লতা দিয়ে ঝোড়া বানান। পাশের গ্রামের বাজারে সেই ঝোড়া বিক্রি করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনেন তিনি। কখনো ঝরে পড়া ফল খেয়ে নেন। কোনো প্রাণীকে হত্যাও করেননি। বন দপ্তর তাকে জঙ্গলের রক্ষক বলে মনে করে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, জঙ্গলে ‌১৭ বছর থেকেও নিজের লক্ষ্য থেকে পিছপা হননি তিনি। জমির কাগজপত্র সব এখনো নিজের কাছে গুছিয়ে রেখেছেন। ঝোড়া বেচে অল্প অল্প করে টাকা জমাচ্ছেন। তার জীবনের একটিই লক্ষ্য, জমি একদিন ফেরাতেই হবে।

চন্দ্রশেখরের কোনো আধার কার্ড নেই। কিন্তু পরিচিতির জন্যই পাশের গ্রামের পঞ্চায়েত থেকে তাকে কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জঙ্গলের মধ্যে হেঁটে গিয়ে তাকে করোনার টিকা দিয়েছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *