মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ড্রোন হামলা নিয়ে পেন্টাগনের চাঞ্চল্যকর তথ্য

আন্তর্জাতিক

স্বদেশবাণী ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ড্রোন হামলাকে ‘ব্যাপক ত্রুটিপূর্ণ’ বলে পেন্টাগন এক গোপন নথিতে জানিয়েছে। পেন্টাগনের ওই গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ড্রোন হামলায় এক বেসামরিক নাগরিকের নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে বলে আল জাজিরা রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

পেন্টাগনের গোপন নথিতে বলা হয়েছে, মার্কিন ড্রোন হামলার কারণে সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানে প্রাণ হারিয়েছেন সহস্রাধিক বেসামরিক মানুষ। এসব হামলা থেকে শিশুরাও রেহাই পায়নি। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব বেসাময়িক নাগরিক নিহত হওয়ার একটি ঘটনাতেও ভুল স্বীকার বা কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের অনেক ঘটনার মধ্যে মাত্র এক ডজনেরও কম ভুক্তভোগী বা স্বজনকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

২০১৬ সালের ১৯ জুলাইতে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘আমেরিকান স্পেশাল অপারেশন্স’ বাহিনী হামলা চালিয়ে ৮৫ জন ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করে। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে দেখা গেছে এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১২০ জনের বেশি মানুষ। নিহতদের সবাই ছিলেন নিরীহ গ্রামবাসী।

এছাড়া, ২০১৭ সালে ইরাকের পশ্চিম মসুলে মার্কিন বিমান থেকে একটি গাড়ি লক্ষ্য হামলা চালানো হয়। মার্কিন বাহিনীর দাবি অনুযায়ী গাড়িটিতে বোমা ছিল। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে দেখেছে সেই তথ্য সঠিক নয়। গাড়িটিতে মাজিদ মাহমুদ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি, তার স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিল। হামলায় তারা সবাই এবং আরও তিন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।

প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে বোমা হামলায় মার্কিন বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার বিষয়টি নিয়মিতভাবেই এড়িয়ে গেছে।

গত আগস্টে কাবুল বিমান বন্দরে আত্মঘাতী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা করে। পেন্টাগন থেকে শুরুতে দাবি করা হয়েছিল তারা বোমা বহনকারী একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে দেখা যায় নিহত ১০ জন একই পরিবারের সদস্য।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধরত মার্কিন সেনাদের মৃত্যুতে সমালোচনার মুখে তৎকালীন বারাক ওবামা সরকারের আমলে বিমান হামলার পরিধি বাড়ানো হয়। ধীরে ধীরে ওই সব দেশগুলো থেকে সেনা কমিয়ে ড্রোন হামলা বাড়ায় মার্কিন প্রশাসন। বারাক ওবামা এই হামলাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে নিখুঁত বিমান অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করেন। ওবামার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলেও এসব ড্রোন হামলা অব্যাহত থাকে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়াতে ৫০ হাজারের বেশি হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *