ফাইনাল পরীক্ষা দিতে হবে না, টেস্টেই গদি উল্টে যাবে: রিজভী

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: আওয়ামী লীগ টিকে থাকার জন্য আবোল-তাবোল বলছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আর কিন্তু বেশি সময় নেই। মেট্রিক পরীক্ষা দেওয়ার আগে টেস্ট দিতে হয়। ফাইনাল দেওয়া লাগবে না, টেস্ট পরীক্ষায় শেখ হাসিনার গদি উল্টে যাবে।

শনিবার (২৩ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আওয়ামী লীগ নেতার শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যের প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা রাতে জেগে জেগে নয় দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখেন এবং আতঙ্কিত হন জনগণের উত্তাল প্রবাহের মধ্যে নেতৃত্ব দিয়ে তারেক রহমান আসছেন। এই আতঙ্কে তার দিন রাত কাটে বলেই তিনি তার সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন জিয়া পরিবার সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলতে। এরা সেই কাজটুকুই করছেন।

শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনারা নেতাকর্মীদের দিয়ে এত কথাই বলান, তারপরও আপনার সরকার এত আতঙ্কিত কেন? আপনার এত আতঙ্ক কেন? আপনারা বলেন বিরোধী দল বিএনপি নেই তারপরও আপনাদের টার্গেট খালেদা জিয়া, তারেক রহমান কেন? মানুষ যতই অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করুক না কেন সব সময় আতঙ্কে থাকে কখন তার অপরাধ ও কুকীর্তির জন্য তার ওপর শাস্তি ধেয়ে আসে কি না।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা গণতন্ত্র হত্যা করেছেন, নির্বাচনকে নিরুদ্দেশে পাঠিয়েছেন। বিরোধী দল শূন্য করার জন্য গুম খুমের মতো কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তারপরও আপনাদের আতঙ্ক কাটে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আতঙ্কিত, আপনি ভেবেছেন নিজের মতো করে প্রশাসন সাজিয়েছেন আপনার কিছুই হবে না। কিন্তু আমরা চূড়ান্তভাবে দেখেছি বিপদ আসলে কেউ এগিয়ে আসে না। জনগণ যখন রাস্তায় নামবে আপনাদের ধাওয়া করবে তখন আপনার লোকেরাই আগে পালাবে। কেউ আপনার দিকে এগিয়ে আসবে না।

তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শুনলাম নতুন একটা জিনিস আবিষ্কার করেছে কুইকরেন্টাল। এর তাৎপর্য ও পদ্ধতি আমরা পরে বুঝতে পারলাম। এটা এমন একটা পদ্ধতি যেটার মাধ্যমে নিজের আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিষ্ঠিত করা যায়। এই খাতে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এই টাকা কারা পেয়েছে? সব আওয়ামী লীগের আত্মীয়-স্বজন। আওয়ামী লীগের এমপি নেতা না হলে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন।

‘যদি তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন নাও করে তাহলে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে না। এই খাতে জনগণের ৫০ হাজার কোটি টাকা চলে গেছে। এই ক্যাপাসিটি চার্জে জনগণের ৫০ হাজার কোটি টাকা চলে গেছে কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো বিদ্যুৎ পায়নি। তাহলে আমরা কোন লুটেদের জগতে বাস করছি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। কেউ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। শান্তিতে বসবাস করতে পারবেও না যতদিন শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতা ধরে আছেন। চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করবে কারণ মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার নেই। সব গণতান্ত্রিক অধিকারকে তারা বন্দি করে রেখেছে। ভোট নির্বাচন সবকিছুকে তারা কবরস্থ করেছে। এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না। তাই রাজপথেই আমাদের নামতে হবে।

তিনি বলেন, রাজপথে নামলে আমাদের বাধা দেবে এমনকি গুলি করতে পারে। এই গুলিকে বরণ করে রাস্তায় দাঁড়ালে শেখ হাসিনা থাকবেন না। কারণ দেখবেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার আপনজনরা আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছেন। তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন।

‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার মন্ত্রীকে বলছেন স্যার এই নিয়ে কত কথাবার্তা, আবার বলছেন তরবারি ও রাইফেল নিয়ে রাস্তায় নামতে। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন বলেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে। এই যে তালগোল পাকিয়ে ফেলছে, এতেই বুঝতে পেরেছেন তারা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে তাদের টিকে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।’

রিজভী বলেন, তারা আর একটা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করবেন। দেশের জনগণ, ভোটার ছাড়া আর একটা নির্বাচন করার চেষ্টা করবেন। সেজন্যে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন। কিন্তু অবৈধভাবে, নিজের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কাউকে নিয়োগ দেন তাহলে সে তালগোল পাকাবেই। তবে তাকে দিয়ে আর কোনো কাজ করাতে পারবেন না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিনা বেগম মিনি প্রমুখ।

 

স্ব.বা/ রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *