তানোরে ২৯ বছরেও হয়নি শিমার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি: জন্মের পর থেকে এক হাতের সবগুলো আঙুল নেই শিমার। একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে নিতে দিনের পর দিন উপজেলা সমাজসেবা অফিসে ও জনপ্রতিনিধিদের দারে দারে ঘুরেও কেউ করে দেয়নি শিমাকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড। ফলে প্রতিবন্ধী হয়েও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের আশা ছেড়ে দিয়েছেন শিমা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিমার বাড়ি পাঁচন্দর ইউপির চাঁদপুর গ্রামে। সে চাঁদপুর গ্রামের দিনমজুর সেন্টুর স্ত্রী। তাদের সংসারে রয়েছে দুটি সন্তান। স্বামী সন্তান নিয়ে একটি কুঁড়ে ঘরে বসবাস করেন শিমা। এমনকি সেই ঘরেই রাখেন গরু ও ছাগল। এতে করে একটি খুপরি ঘরে স্বামী সন্তান ও গরু ছাগল নিয়ে একঘরে বসবাস করতে চরম কষ্ট পেতে হয় প্রতিবন্ধী শিমাকে। তবুও যেন তাদের প্রতি চোখ পড়ে না জনপ্রতিনিধিদের। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ প্রতিবন্ধী ভাতা বয়স্ক ভাতার আওতায় নিয়ে যাচ্ছে দেশ। সেখানে শিমার মত একজন অসহায় দরিদ্র প্রতিবন্ধী মহিলাকে দিনের পর দিন ঘুরে ঘুরেও কোন জনপ্রতিনিধি তো দূরের কথা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে ঘুরেও শিমাকে দেয়নি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড।

অসহায় দরিদ্র প্রতিবন্ধী শিমার সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, জন্মের পর থেকে তাঁর একটি হাতের কোন আঙুল নেই,একটি প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসে ও ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা ধরেও তাঁরা আমাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়নি। সমাজসেবা অফিসে গেলে বলে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করতে। আর চেয়ারম্যানের কাছে গেলে বলে এটা পরিষদের কাজ না, এটা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কাজ, আপনি সেখানে গিয়ে যোগাযোগ করেন বলে ফেরত পাঠানো হয়। আমি একজন অসহায় মহিলা এভাবে একবার উপজেলা সমাজসেবা অফিস যাবো,না ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে যাবো। বাড়ি থেকে উপজেলা যেতে লাগে ৩০টাকা, আসতে লাগে ৩০টাকা। যদি এভাবে প্রায়দিন প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য উপজেলা যেতে হয় তাহলে আমরা গরীব মানুষ ভাড়ার টাকা দিব,না সংসার চালাবো। তাঁর পরেও সমাজসেবা অফিসে ১০/১২দিন বারান্দা ঘুরেও তাঁরা আমার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়নি। আমারমত অসহায় প্রতিবন্ধী মহিলা যদি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড না পায় তাহলে কারা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পাবে বলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রতিবন্ধী শিমা।

তানোর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেনের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, তাঁর কাছে এ প্রতিবন্ধী মহিলা কখনো আসেনি, তাঁর মত মহিলা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড না পেলে কে পাবে প্রতিবন্ধীর কার্ড। শিমা আমার অফিসে যোগাযোগ করলে আমি দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে শিমার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দিব। যাঁরা প্রকৃত অর্থে প্রতিবন্ধী তাঁরা কেউ ভাতার আওতার বাহিরে থাকবেনা বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেয়ার দায়িত্ব উপজেলা সমাজসেবা অফিসের,এখানে ইউপি পরিষদের কোন কিছু করার নাই বলে ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।

 

 

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *