বাঘায় ‍উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাড়িতে দুই সন্তানের মায়ের অনশন !

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘায় বিয়ের দাবিতে এক কিশোরের বাড়িতে অনশন করেছে গৃহবধু। মঙ্গলবার (২৬ শে জুলাই) রাতে তার স্বামী-সন্তান রেখে ওই কিশোরের বাড়িতে অবস্থান নেয় গৃহবধু। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদিপুর পন্ডিত পাড়া গ্রামে।

স্থানীয় জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত ৮ টায় বিয়ের দাবি নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নাঈমের বাড়িতে যায় ওই গৃহবধু। কিন্তু সেখানে নাঈমকে বাড়িতে না পেয়ে তার বাড়িতেই অবস্থান নেয়। তাদের দু’জনের বাড়ি একই এলাকায়। তার দুইটি কন্যা সন্তান আছে। বড় মেয়েটির বয়স ৬ বছর ও ছোট মেয়ের বয়স ২ বছর ৬ মাস।

বুধবার (২৭ জুলাই) সেখানে গিয়ে ওই গৃহবধূ ও নাঈমের অসুস্থ মা ও বোন ছাড়া কাউকে পাওয়া য়ায়নি।

ওই গৃহবধুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পরিচয়ের সুত্র ধরে গত রমজান মাস থেকে নাঈমের সাথে আমার ফোনে কথা বলা শুরু হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। এর মাঝে ইমোতে কথা বলার কোন এক সময় আপত্তিকর কিছু ছবি নিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে নাঈম। সেই ছবির ভয় দেখিয়ে শারিরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়।

কোথায়,কিভাবে জানতে চাইলে নাঈম বলে, তোমার স্বামীকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ায়ে আমার বাড়িতে চলে আসো। আমার আব্বা-আম্মুকে আমি ম্যানেজ করবো । তার কথা মতে তার দেওয়া ঘুমের ঔষধ আমার স্বামীকে খাইয়ে রাতে তার বাড়িতে আসি । সেই রাতে আমাদের শারিরিক সম্পর্ক হয়। সেখান থেকেই নাঈম আমাকে বিয়ে করবে এবং আমার মেয়ের দায়িত্ব নেবে বলে আশ্বাস দেয় । পরে তার কথা মত মঙ্গলবার রাতে আমি নাঈমের বাড়িতে আসি। তাকে না পেয়ে তার বাড়িতেই অবস্থান করছি ।

এখন কি করতে চান জানতে চাইলে গৃহবধু বলেন, নাঈম না আশা পর্যন্ত আমি এখানেই অনশন করবো। তার সাথে আগে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি ।

নাঈমের বোন সালমা খাতুন বলেন, ওই মেয়েটি যখন আসে তখন তার সাথে ৮/১০ জন ছেলে আসে । তারা আমাদের বাড়ির সামনের ইটের প্রাচীর ও গেট ভেঙ্গে ওই গৃহবধুকে আমাদের বাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে তারা চলে যায় । তাদের বাড়িতে থাকা বড় একটি ছাগল কে বা কারা নিয়ে গেছে।

তার ধারনা,যারা তাদের বাড়িতে এসেছিল, তারা নিয়ে যেতে পারে। পলাতক ওই ছেলে সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

গৃহবধুর স্বামী সাগর আলী বলেন , আমি তাকে আর আমি ফিরিয়ে নেব না । আমাকে যে ঘুমের বড়ি খাওয়াতে পারে সে আমাকে বিষ খাওয়াতেও পারে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি জানার পর চেয়ারম্যানকে এবং থানাকে অবগত করি । পুলিশ এসে স্থানীয়ভাবে সমাঝোতার কথা বলে চলে গেছে।

মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শোনার পর সেখানে সকালে আমি গিয়েছিলাম। ওই গৃহবধুকে ছেলের বাড়ির লোকদের জিম্মায় রেখে এসেছি এবং সেই ছেলেকে হাজির করতে বলে এসেছি । সে আসলে একটা সমধানের চেষ্টা করা হবে।

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পরে ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা রয়েছে। তাই স্থানীয়ভাবে সমধান করতে বলা হয়েছে। আর যদি লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গৃহবধু ওই কলেজ ছাত্রের বাড়িতে অবস্থান করছিল।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *