“১৬ বছর পর প্রাণ ফিরলো ফেনী ট্রমা সেন্টারে”

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক : জনবল নিয়োগের পর প্রাণ পেয়েছে ফেনীর ট্রমা সেন্টার। সম্প্রতি হাসপাতালে পাঁচজন চিকিৎসক, পাঁচজন সেবিকা ও একজন ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন সরঞ্জাম ও আরও জনবল দেওয়া হলে এ হাসপাতাল থেকে সেবা নিতে পরবেন এলাকার মানুষ। এতে করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের চাপ কমবে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য দুই কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ শয্যার হাসপাতালটি নির্মাণ করে গণপূর্ত বিভাগ। পরে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আউটডোর ও ইনডোর চালু করার ঘোষণাও দেয়। কিন্তু সে ঘোষণা দীর্ঘদিন বাস্তবতা পায়নি। হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে প্রতিদিন রোগীরা হাসপাতালে ভিড় করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিনতলা ভবনের নিচতলায় করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। দ্বিতীয় তলায় চলছে আউটডোর সেবা কার্যক্রম। সেখানে খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করে আগত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসকগণ। সঙ্গে দিচ্ছেন বরাদ্দকৃত সরকারি ওষুধ। বহির্বিভাগ সেবা পেয়ে খুশি স্থানীয়রা।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম সাইফুল আলম জানান, এখানে সাধারণত ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীরাই আসে। হাড়ভাঙা ও দুর্ঘটনায় আক্রান্ত আশংকাজনক রোগী এলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, বহির্বিভাগের সাধারণ রোগীদের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আবাসনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, ২০২২ সালের শুরুতে স্বাস্থ্যবিভাগ নতুন করে জনবল নিয়োগ দেয়। আগে একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে কার্যক্রম চললেও বর্তমানে ট্রমা সেন্টারটিতে একজন অর্থোপেডিক কনসালটেন্ট, একজন অ্যানেস্থেশিয়া কনসালটেন্ট, একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার, দুজন মেডিকেল অফিসার ও একজন ফার্মাসিস্ট কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি আটজনের স্থলে সেবিকা রয়েছেন পাঁচজন।

এছাড়া মেডিকেল টেকনোলজি (ল্যাব), মেডিকেল টেকনোলজি (রেডিওগ্রাফার), অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, আয়া, গাড়িচালক, সুইপার, কুক, ওয়ার্ড বয় ও নিরাপত্তা প্রহরীর পদে কোনো নিয়োগ নেই।

আবু বক্কর নামের এক রোগীর স্বজন জানান, ট্রমা সেন্টারে পর্যাপ্ত সেবা পেলে সদর হাসপাতালে যেতে হতো না। ওই হাসপাতালে রোগীদের গাদাগাদি প্রচুর। নিরুপায় হয়ে সেখানে যেতে হয়।

আরেক রোগীর স্বজন হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন লোকবল না থাকায় ট্রমা সেন্টারের আইসিউ, সিসিইউ, এক্সরে, ইসিজি, আল্ট্রাসোনগ্রাফি, অপরেশন থিয়েটার ও জেনারেটরসহ প্রায় সব যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স ও পানির ব্যবস্থা নেই।

সিভিল সার্জন ডা. রফিক উস সালেহিন বলেন, হাসপাতালটি জনগুরুত্বপূর্ণ। তাই এটি পুরোদমে সচল হওয়া প্রয়োজন। হাসপাতালের ১৯ পদের বিপরীতে ১১ জন নিয়োজিত রয়েছেন। বর্তমানে বিশেষজ্ঞ ধারা বহির্বিভাগ সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।

এ বিষয়ে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, সদর হাসপাতালে প্রচুর রোগীর চাপ থাকে। তাই বহির্বিভাগসহ পর্যায়ক্রমে আন্তঃবিভাগ চালুর বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরোদমে চালুর চেষ্টা চালানো হবে।

স্ব.ব/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *