তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে টাকার বিনিময়ে আশ্রায়ন প্রকল্পের বাড়ি বিক্রির তদন্ত চলমান অবস্থায় ফের চেয়ারম্যান ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন ও তার একান্ত সহচর আব্দুর রশিদের নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউপি এলাকার চাঁদপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী সিমা বেগম ও একই গ্রামের দরিদ্র সাবিনা বেগম পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। এমন অভিযোগের খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি জুড়ে বইছে সমালোচনা, সেই সাথে টাকার বিনিময়ে আশ্রায়ন প্রকল্পের বাড়ি কেনাবেচা ও টাকা আদায় ধনাঢ্য দের বাড়ি দেওয়া থেকে শুরু করে একের পর এক কান্ডে চেয়ারম্যান মতিনের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে তৃনমুলের নেতাকর্মীরা।
প্রতিবন্ধী সিমা অভিযোগে উল্লেখ করেন, চলতি বছরের প্রায় ২ মাস আগে আশ্রায়ন প্রকল্পের সরকারি বাড়ি দিবে বলে চাঁদপুর গ্রামের হামেদের পুত্র আব্দুর রশিদ ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং বলেন এখন ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। আর বাকি ৩০ হাজার টাকা ইট ফেলা মাত্রই দিতে হবে। সেই মোতাবেক রশিদ ও চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন কে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। টাকা দিলেও প্রতিবন্ধী সেন্টুর স্ত্রী সিমা বেগমের ভাগ্যে জুটেনি বাড়ি।
সিমা জানান পাঁচন্দর ইউপি এলাকার চাঁদপুর গ্রামের রাস্তার ধারে আম গাছের নিচে কোনভাবে জীবন যাপন করছি। বাড়ি দিবে বলে টাকা নিল। কিন্তু বাড়ি পেলাম না। হয় তো পুরো ৪০ হাজার টাকা দিলে বাড়ি পেতাম। টাকা ফেরত চাইলে রশিদসহ চেয়ারম্যানের লোকজন নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলছে বাড়াবাড়ি করলে যে জায়গায় বাস করছিস সেখান থেকে তুলে দিবো।
এছাড়াও আরেক অভিযোগ কারী সাবিনা উল্লেখ করেন, বিগত প্রায় তিন মাস আগে সরকারি বাড়ি দিবে বলে রশিদ ১ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ১০ হাজার টাকা এখন দিতে হবে। আর বাকি টাকা তিন দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে দেওয়া লাগবে। নচেৎ বাড়ি ভাগ্যে জুটবেনা। টাকাও দিতে পারিনি এজন্য বাড়িও পায়নি। সাবিনার বাড়ি চাঁদপুর গ্রামে। সে মিলন আহম্মেদের স্ত্রী।
সাবিনা জানান, বেশ কয়েকদিন আগে সরকারি বাড়ির বিষয়ে সাংবাদিকরা আসলে তাদের কে প্রকৃত ঘটনা বলার কারনে আমাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন এবং চেয়ারম্যান ও রশিদ বাহিনী রাতের আধারেও এসে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। সত্য কথা বলার কারনে গ্রামে বসবাস করায় কঠিন হয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত চাঁদপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন অভিযোগ দিলে হবে না, সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাই করতে হবে। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করলে আমিও ব্যবস্হা নিব বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন।
এসব বিষয় জানতে পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিনের ০১৭১৮-০৩১৯৮১ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, অভিযোগের কপি হাতে পায় নি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্ব.বা/বা