বাঘায় এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

গণমাধ্যম রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবিসহ মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে এক দৈনিক নাগরিক ভাবনা পত্রিকার বাঘা প্রতিনিধি চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত বুধবার (৩ আগষ্ট) সাদা মনের মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সামসুদ্দীন সরকারের ছেলে মো. শাহদৌলা মনসুর বাদি হয়ে রাজশাহীর আমলী আদালত – ৪, রাজশাহীতে মামলাটি দায়ের করেন। (মামলা নং ২২৭সি ২০২২ বাঘা)। এতে আসামি করা হয়েছে, দৈনিক নাগরিক ভাবনার উপজেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম, বিশেষ সংবাদ দাতা খাইরুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক মোসা. আফরোজা সিদ্দিকা ও পত্রিকাটির উপ-সম্পাদক রেজাউল করিমকে।

মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ২১ জুন’২০২২ রাত ৮টার সময় “সরেরহাট কল্যানী শিশু সদন”যায় মো. রবিউল ইসলাম,খাইরুল ইসলাম ও রেজাউল করিম। তারা নিজেদের ‘দৈনিক নাগরিক ভাবনা’ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে দেশের সকল এতিমখানা পরির্দশন পূর্বক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সমাজসেবা অধিদপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। এই বলে এতিমখানার হিসাব নিকাশ দেখতে চান তারা।

মামলার বাদি ও বাদির পিতা সরকারি ভারে এতিমখানা পরিদর্শনের বৈধ কাগজপত্র ছাড়া তাদের হিসাব নিকাশ দেখাতে চাননি। এ সময় রবিউল ইসলাম ও খাইরুল ইসলাম বলেন, আমরা (মৌখিক) ভাবে পারমিশন নিয়ে এসেছি। লিখিত কোন কাগজপত্র নাই। পরে তাঁরা বলেন, যদি আমাদের কথা না শুনেন, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভাবে আমাদের মতামত দাখিল করবো। আমাদের হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে ১,০০,০০০(এক লক্ষ) টাকা চাঁদা দিতে হবে। তা না হলে আপনাদের বিরুদ্ধে শক্তভাবে রির্পোট প্রদান করবো। তখন বাঁচার কোন উপায় থাকবে না বলে হুমকি প্রদান করেন।

তাদের অবৈধ দাবি মেনে না নেওয়ায় তারা চলে যায়। পরে দৈনিক নাগরিক ভাবনা পত্রিকায় ২৫ জুন, অনিয়ম ও দূর্নীতি দেখেও সমাজসেবার রহস্যময় নিরবতা ও মানুষের সহানুভুতিকে পুঁজি করে রাজশাহীর বাঘায় চলছে এতিমখানা বানিজ্য, ১৪ জুলাই’২০২২ সমাজসেবার ছত্রছায়ায় চলছে এতিখানা বানিজ্য, “এতিমখানার পরিচালকের অঙ্গুলফুলে কলাগাছ” এবং ২৮ জুলাই বাঘা মুক্তিযোদ্ধার নাম বিক্রি করে জমজমাট এতিমখানা বানিজ্য শিরোনামে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচার করে।

অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, সারাদেশে ও সমাজে বাদির পিতার সুনাম সুখ্যাতি নষ্ট করা হয়েছে। তার পিতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাদা মনের মানুষ হিসাবে অধিক পরিচিত।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, দেশের দুস্থ মানুষের সেবায় আত্বনীয়গ করে সামসুদ্দীন সরকার উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সরেরহাট গ্রামে “সরেরহাট কল্যানী শিশু সদন” ও “মমতাজ আজিজ বৃদ্ধাশ্রম” প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সহিত পরিচালনা করিয়া আসছেন। (“সরেরহাট কল্যানী শিশু সদন” যার রেজি নং ঃ ৪৩০/৯৪ইং তারিখ ০৬-০৯-১৯৯৪) তিনি। সেখানে প্রায় ৬০ জন বৃদ্ধা ও ১৪০ জন অনাথ শিশু ছেলে-মেয়ে বসবাস করছেন। তাঁদের বিনে পয়সায় খাওয়া-দাওয়া ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

আত্ম মানবতার সেবা করার কারণে দেশের বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান বাদির পিতাকে সাদা মনের মানুষ উপাধিতে ভ’ষিত করেছেন।

তার কল্যাণকর কাজের জন্য জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকসহ অনলাইন পোর্টাল নিউজে বিভিন্ন শিরোনামে বিভিন্ন সময়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। তা ছাড়াও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় খোলা কলমে, বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি’শো ইত্যাদি পরিচালক হানিফ সংকেত , বাদির পিতা সামসুদ্দীন সরকারকে সাদা মনের মানুষ হিসাবে ইত্যাদি অনুষ্ঠানে প্রচার করেছেন।

সামসুদ্দীন ওরফে সমেশ আলী বলেন, আমি মিথ্যা কোন অভিযোগ করিনি। ওই সাংবাদিকদের দাবি করা এক লক্ষ টাকা না দেওয়ায় মামলার আসামিরা যোগসাজসে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন এবং আমাকে ও আমার স্ত্রী মেহেরুন্নেছাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। এতে মান সম্মানের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের নয়, পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে অনুসন্ধানী রির্পোট করা জন্য তারা এসেছেন বলে এতিমখানার পরিচালককে জানিয়েছিলেন। চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বিকার করে তিনি বলেন, পত্রিকায় যে রির্পোট প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি পত্রিকার অফিস থেকে আসা প্রতিনিধিদল করেছে। তবে আমি তাদের সাথে ছিলাম। এতিমখানা পরিচালক ও স্থানীয়দের সাথে কথাবার্তা বলে সংবাদ প্রকাশ করেছেন বলে দাবি করছেন রবিউল ইসলাম।

 

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *