অভিভাবক সদস্যর পদ থেকে চারজনের পদত্যাগ “সভাপতির পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি”

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় নওটিকা আরিফপুর সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে দ্ব›েদ্বর জের ধরে ওই পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার (০৫-০৯-২০২২) সভাপতি পদে নির্বাচিত করার কথা ছিল। শেষ মেষ স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, প্রায় আড়াই মাস আগে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে (পুরুষ-মহিলা) স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটারে বায়েজুল ইসলাম ও রুমা খাতুনের নাম অর্ন্তভ’ক্ত করা হয়। পরে সভাপতি পদে সেই দুই জনই প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। এই পদে বিএ পাশ ডিগ্রীধারি হতে হবে। এদের একজন রুমা খাতুন ডিগ্রী পাস সনদপত্র দেখাতে পারলেও অপরজন জন বায়েজুল ইসলাম ডিগ্রী পাস সনদপত্র দেখাতে চাননি। গত ৩০ জুন স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটারে নামের পরিবর্তন এনে রুমা খাতুনকে বাদ দিয়ে রুমিয়া খাতুনের নাম অর্ন্তভ’ক্ত করা হয়। কিন্তু রুমিয়া খাতুনের কোন শিক্ষার্থী স্কুলে না থাকায় নিয়মমাফিক সে বিদ্যুৎসাহী সদস্য হতে পারেননি। পরে একইভাবে বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে বায়েজুল ইসলামের নাম ঠিক রেখে রুমিয়া খাতুনের নাম পরিবর্তন করে তানজিরা বেগমের নাম অর্ন্তভ’ক্ত করা হয়।

এসব অবস্থা দেখে অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচিত চারজন সদস্য প্রধান শিক্ষকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। যার ফলে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে চারটি পদ শূন্য হয়ে যায়। এরপরেও ৫ সেপ্টেম্বর সভাপতি নির্বাচনের জন্য মিটিং ডাকা হয়। সেখানে সভাপতির নাম ঘোষনা নিয়ে চাপের মুখে পড়েন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ম নীতি বর্হিভ’ত হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চাপা উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে পরে স্থগিত করা হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হোক। বাদপড়া বিদ্যোৎসাহী সদস্য রুমা খাতুন জানান, প্রায় আড়াই মাস আগে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মিটিং ডাকা হয়। সেই মিটিং এ ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যর মধ্যে তার পক্ষে সমর্থন বেশি ছিল। বায়েজুল ইসলাম সভাপতি হতে পারবে না জেনে মিটিং শেষ না করেই চলে যায় বলে জানান তিনি। পরে তার নাম বাদ দিয়ে একের পর এক নাম পরিবর্তন করে নিয়ে আসে।

১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান,নিয়ম মেনেই সভাপতি নির্বাচিত করার জন্য মিটিং চলছিল। যখন দুইজন প্রার্থী হলেন,তখনই সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। রুমা খাতুনের নাম পরিবর্তন করে যখন একের পর এক নাম অর্ন্তভ’ক্ত করে ডিও লেটার নিয়ে আসে,তখন অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচিত চারজন সদস্য পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি। আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি করা হোক।

সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্বি প্রার্থী বায়েজুল ইসলাম জানান,ডিও লেটারে রুমা খাতুনের নামের পরিবর্তন রুমিয়া খাতুনের নাম অর্ন্তভ’ক্ত করা হয়েছিল। স্কুলে তার শিক্ষার্থী না থাকায় তার নাম পরিবর্তন করে তানজিরার নাম অর্ন্তভ’ক্ত করা হয়েছে। তবে ডিও লেটারে নামের সংশোধনী আনা হলেও কাকে সভাপতি করতে হবে এমন কোন নির্দেশনা নেই।

প্রধান শিক্ষক কবিরুজ্জামান জানান, ডিগ্রী পাশ ব্যক্তিরা সভাপতি নির্বাচিত হতে পারবেন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে তাদের ডিগ্রী পাশের সনদপত্র দেখতে চাওয়ার বিধান রয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী রুমা খাতুন তার বিএ পাস সার্টিফিকেট দেখালেও অপর সভাপতি প্রাার্থী বায়েজুল ইসলাম তার ডিগ্রী পাস এর সনদ না দেখিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন। বিষয়টি উপজেলা ষিক্ষা অফিসারকে অবহিত করার পর কয়েকদিন অপেক্ষার করার নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে বিদুৎসাহি সদস্যর নাম পরিবর্তন করা হলেও চার সদস্য পদত্যাগ পত্র জমা দেন। বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার (০৫-০৯-২০২২) বসা হয়েছিল। তবে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়নি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার অবগত করা হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মীর মোঃ মামুনুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই। প্রধান শিক্ষক কিভাবে কি করবেন,সেটির দায়ভার তার। তবে প্রয়োজন হলে আমার সাহায্য নিতে পারে।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *