আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পেতে কী লাগে?

আন্তর্জাতিক লীড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত বিদেশি নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিসা চালু করেছে বছর তিনেক আগে। এর আওতায় পাঁচ ও ১০ বছর মেয়াদে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। সমপ্রতি বাংলাদেশের কিছু লোক এ ধরনের ভিসা পেয়েছেন বলে শোনা যায়, যার মধ্যে তারকা খেলোয়াড় থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।

মূলত আমিরাতে ১০ বছর মেয়াদে যে ভিসা দেওয়া হচ্ছে, সেটিই গোল্ডেন ভিসা। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম ২০১৯ সালে গোল্ডেন ভিসা চালু করেন। এর আওতায় চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার লোকদের সপরিবারে ১০ বছর আমিরাতে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়।

সৌদি আরব অনেক আগেই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ বছর মেয়াদী ভিসা চালু করেছে। আমিরাত ২০১৯ সালে এটি চালু করলেও পরে করোনাভাইরাস মহামারির জন্য খুব বেশি গতি পায়নি। তবে স¤প্রতি এ ধরনের ভিসা দেওয়ার হার অনেক বাড়িয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

কত ধরনের ভিসা দেয় আমিরাত
বিভিন্ন খাতের কর্মীদের জন্য দুই বছর এবং ব্যবসায়ীদের জন্য তিন বছর মেয়াদে ভিসা আগে থেকেই দিচ্ছিলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। বিনিয়োগকারী ধরে রাখা ও নতুন বিনিয়োগকারী টানতে এরপর পাঁচ বছর মেয়াদে গ্রিন ভিসা ও ১০ বছর মেয়াদে গোল্ডেন ভিসা চালু করে তারা।

ভিসার ধরন নির্ভর করে মূলত বিনিয়োগের ওপর। আমিরাকের ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে একটি সনদ দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতে আবেদন করলে ভিসা দেয় সরকার।

গোল্ডেন ভিসা কারা পান, সুবিধা কী
নির্দিষ্ট কিছু ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে ভিসা ইস্যু করে আমিরাত কর্তৃপক্ষ, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবীরা সেখানে বসবাস, চাকরি ও পড়াশোনা করতে পারবেন। আগামীতে শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন খাতের মেধাবী পেশাজীবীরাও এর আওতাভুক্ত হবেন।

আমিরাতে ২০ লাখ দিরহামের সম্পত্তি কিনলে বা সমপরিমাণ অর্থ সেখানকার ব্যাংকে রাখলেই গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। ভিসাটি ১০ বছরের জন্য বৈধ ও নবায়নযোগ্য হবে। এটি পেলে ছয় মাসের মধ্যে একাধিকবার সেদেশে প্রবেশ করা যাবে। ইস্যু করা হবে রেসিডেন্ট পারমিটও।

আমিরাতের বাইরে থাকলেও গোল্ডেন ভিসা বাতিল হবে না। আর ভিসাধারীরা যেকোনো সংখ্যক গৃহকর্মী স্পন্সর করতে পারবেন। ভিসাধারীর মৃত্যু হলেও তার পরিবারের সদস্যরা আমিরাতে থাকতে পারবেন।

তবে ভিসার জন্য ব্যক্তিকে কমপক্ষে স্নাতক পাস এবং মাসিক বেতন কমপক্ষে ৩০ হাজার দিরহাম হতে হবে। খেলা, শিল্প, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, আইনসহ কয়েকটি ক্ষেত্রের মেধাবীরা গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধু মেধা যাচাই করবে আমিরাত কর্তৃপক্ষ।

অন্য ভিসায় সুবিধা কেমন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন নিয়মে মাল্টিপল এন্ট্রি টুরিস্ট ভিসার জন্য কোনো স্পন্সর প্রয়োজন নেই। টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দেশটিতে ১৮০ দিন পর্যন্ত থাকা যাবে।

অস্থায়ী কাজের ভিসার ক্ষেত্রে চুক্তি বা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে একটি চিঠি ও উপযুক্ততার প্রমাণ দিতে হবে। অধ্যয়ন বা প্রশিক্ষণ ভিসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে জমা দিতে হবে।

পারিবারিক ভিসার জন্য ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানদের স্পন্সর করতে পারবেন পিতা-মাতা। চাকরি ভিসার ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীরা সেখানকার সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য ভিসাটি পেতে পারেন। গ্রিন ভিসা যারা পাবেন, তারা তাদের পরিবারকে স্পন্সর বা নিয়োগকর্তা ছাড়াই আমিরাতে নিয়ে যেতে পারবেন।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *