বাঘায় সিজারিয়ান অপারেশনের মধ্য দিয়ে চালু হলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওটি

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় প্রতিষ্ঠার উনত্রিশ বছর পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপরেশন থিয়েটর (ওটি) চালু করা হয়েছে। মনিরা বেগম নামের এক প্রসূতি মায়ের সফল সিজারিয়ান অস্ত্রপচারের মধ্য দিয়ে চালু করা হয়েছে ওটি । এ সময় প্রসূতি মায়ের পেট থেকে একটি পুত্র সন্তান বের করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আশাদুজ্জামান বিশেষজ্ঞ সার্জনের হাতে অস্ত্রপচারের যন্ত্রপাতি তুলে দিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে গাইনি বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাঃ ফারহানা ও এনেসথেসিওলজিষ্ট ডাঃ আবুল এহসান সিজার অপারেশনটি করেছেন। সহযোগিতা করেন ডাঃ মল্লিকা সরকার ও ওটি ইনচার্জ স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগম। উপস্থিত ছিলেন মেডিসিন কনসালটেন্ট ডাঃ পার্থ মনি,শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আসাদ-উদ ইসলাম,হাড় জোড় বিশেষজ্ঞ আহসানুজ্জামান ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাকেশ পান্ডে।
মা ও শিশু দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আসাদ-উদ ইসলাম। মনিরা বেগম উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী। কবির হোসেন জানান, সেবার মানে তিনি সন্তষ্ট।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আশাদুজ্জামান বলেন, এখানে গাইনি সার্জারির বিশেষজ্ঞ পদায়ন না থাকায় কাজটি করা যাচ্ছিল না। পরে স্থানীয় বা আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে সিভিল সার্জনের নির্দেশ মোতাবেক নিয়োগকৃত গাইনি সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে সিজারিয়ান আপারেশন করা হয়েছে । এখন থেকে সপ্তাহের বুধবার ওটি হবে। তিনি জানান, গাইনি ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হলে নিয়মিত অপারেশন করা সম্বব হবে। এই দুটি পদসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারির স্বল্পতা রয়েছে। যোগদানের পর থেকে চেষ্টা করছি প্রাইভেট হাসপাতালমুখী রোগীদের ফিরিয়ে আনতে। তার কাজে সহযোগিতা করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি।
জানা যায়, দীর্ঘদিন এখানে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় এলাকার প্রসূতি মায়েরা সরকারি হাসপাতালের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। কার্যক্রমটি শুরু করায় সবাই খুশি। এই কার্যক্রমটি এলাকাসীর জন্য সুখবর উল্লেখ করে সাবেক (ইউপি) চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন আশাকরি তা অব্যাহত থাকবে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে,২৯ বছর যাবত কোনো অপারেশন হয়নি। ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে বাঘায় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। আধুনিক মানের অপারেশন থিয়েটার ও যন্ত্রপাতি থাকলেও ম্যানপাওয়ারের অভাবে অস্ত্রপচার হচ্ছিল না। সামান্য অপারেশনের জন্য রোগীদের জেলা হাসপাতালসহ স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে হয়। প্রতিষ্ঠাকালে নীচ তলায় আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হয়। পরে দ্বিতীয় তলায় স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অপারেশন থিয়েটর স্থাপন করা হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে,গড়ে ৩০০-৪০০ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণ করছেন নিয়মিত। রোগ নির্ণয়ে অধিকাংশ রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ২৪ ঘণ্টা ইসিজি, এক্স-রে, জিন এক্সপার্ট মেশিনে য²া নির্ণয় ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ দেওয়া হচ্ছে দাঁতের ও চোখের আধুনিক চিকিৎসা। আগের তুলনায় বর্তমানে নরমাল ডেলিভারির হার অনেক বেশি। তবে রোগী পরিবহণে রয়েছে ১টি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *