নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলো ৮০টি দল

জাতীয় রাজনীতি লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে হরেক নামের রাজনৈতিক দল আবেদন করেছে। চার মাসের আবেদনের সময়সীমার শেষ দিন রবিবার (২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত ৮০টি দল ইসিতে আবেদন জমা দিয়েছে। যাবতীয় তথ‌্য যাচাই-বাছাই করে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করার কথা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, নির্ধারিত সময়ে ৮০টি দলের আবেদন পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি প্রাথমিকভাবে আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করবে। তারপর ইসির বিবেচনার জন্যে তা উপস্থাপন করা হবে।

শর্ত পূরণ করছে কিনা তা পরীক্ষা করতে নিবন্ধনযোগ্য দলগুলোর দলিলাদিও মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কারণে আলোচনায় থাকা গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। তেমনই নাকফুল, মুসকিল, ইত্যাদি রাজনৈতিক দলের নামও রয়েছে নিবন্ধনের জন্য জমা দেওয়া আবেদনের তালিকায়।

ইসিতে যেসব দল আবদেন করেছে সেগুলো হলো— নৈতিক সমাজ, বাংলাদশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিক পার্টি, মুসকিল লীগ, নতুন বাংলা, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন (বিজিএমএ), বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট (পিডিএ), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বৈরাবরী পার্টি, বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ও ননপ্রবাসী কল্যাণ দল, বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ আম জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট (বিডিএম), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, এবি পার্টি, সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-(বিএনএম), বাংলাদেশ এলডিপি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক লীগ, গণ রাজনৈতিক জোট-গর্জো, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), নতুন ধারা বাংলাদেশ-এনডিবি, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, জাতীয় জনতা পার্টি, কৃষক শ্রমিক পার্টি (কে. এস. পি), বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বি এল ডিপি), ভাসানী অনুসারী পরিষদ, নাকফুল বাংলাদেশ, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ তৃণমূল কংগ্রেস, মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিজম ডেমোক্রেটিক পার্টি, রাজনৈতিক আন্দোলন, বাংলাদেশ জনতার অধিকার পার্টি, বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি- বিএইচপি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএনজিপি), জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি, যুব সেচ্ছাসেবক লীগ, ন্যাপ (ভাসানী), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ (বিজেএল), বাংলাদেশ ইসলামিক গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ মাইনরিটি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গ লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি), জনতার অধিকার পার্টি (পি আর পি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি),বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জনস্বার্থে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় ইনসাফ পার্টি, সাধারণ জনতা পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ মানবতাবাদী দল, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি (বি.ইউ.আই.পি), বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল (বিডিপি), মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, গণ অধিকার পার্টি (পি আর পি), বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বি এম জে পি) ও যুবসমাজ পার্টি।

সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিবন্ধন চালুর পর বর্তমানে ৩৯টি দল নিবন্ধিত রয়েছে। দলীয় প্রার্থীর বাইরে অন্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হয়।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কমিশনের তিনটি শর্তের মধ্যে একটি পূরণ হলে একটি দল নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়। নতুন কোনও দলকে নিবন্ধন পেতে হলে শেষ শর্তটিই পূরণ করতে হয়।

২০০৮ সালে প্রথম নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। নবম সংসদের আগে ১২৬টি দল আবেদন করলেও শর্ত পূরণ করে ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ৪৩টি দল আবেদন করে। আরও তিনটি দল ২০১৩ সালে নিবন্ধন পায়।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৭৬টি দল আবেদন করলেও একটি দলও নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়নি। অবশ্য, আদালতের আদেশে তখন দু’টি দল নিবন্ধন পায়।

সব মিলিয়ে ৪৪টি দল নিবন্ধন পেলেও ফ্রিডম পার্টি, জামায়াতে ইসলাম, জাগপা, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপির নিবন্ধন বাতিল হয়। এখন ৩৯টি দল নিবন্ধিত রয়েছে।

ইসি আলমগীর যা বলছেন

রবিবার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অফিসারদের দিয়ে কয়েকটা কমিটি করে দেবো। সেখানে আমাদের সংবিধান ও আরপিও-সহ যে সব বিষয় আছে, তার আলোকে দলগুলো যেসব তথ্য ও ডকুমেন্ট দিয়েছে, তা কমিটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। আইনি যেসব শর্ত আছে, সেসব শর্ত পূরণ করলো কিনা, সেগুলো দেখতে হবে।’

তিনি জানান, কোনও শর্ত যদি অপূর্ণ থাকে, তাহলে তাকে নিবন্ধন দেওয়ার সুযোগ নেই। সব শর্তই পূরণ করতে হবে।

ইসি আলমগীর বলেন, ‘হয়তো কালকে কমিশন সচিবালয় ফাইল তুলবে। এরপর তারা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তারপর আমাদের কাছে দেবে। আমরা যদি কাগজপত্র দেখে মনে করি, আরও যাচাই করতে হবে, তাহলে সেটা করা হবে। আর যদি ১০০ ভাগ শর্ত পূরণ হয় নিবন্ধন পাবে। সব দলের জন্য সেই একই শর্ত।’

এই নির্বাচন কমিশনার জানান, যারা নিবন্ধন পাবে তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে, আর যারা পাবে না তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে যে, কোন শর্ত পূরণ না করার জন্য তাদের নিবন্ধন দেওয়া হলো না।

শর্তগুলো হলো— ১. দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনও জাতীয় নির্বাচনে আগ্রহী দলটির যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকেন, ২. যেকোনও একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেওয়া আসনগুলোতে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পান। ৩. দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সংবলিত দলিল থাকে।

একযুগে নিবন্ধন পেলো যারা

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলগুলো হচ্ছে— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, গণতন্ত্রী পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, জাকের পার্টি, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি -বিজেপি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *