প্রকাশ্যে দাওয়াতে আসামীরা খুজে পাচ্ছেনা পুলিশ

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহী শহরে এনাগ্রুপের প্রধান কার্যালয় এনা টাওয়ারে ফিঠা উৎসবে প্রতিবন্ধী নেতা শামসুল আলমকে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলার মুল আসামী তানোর উপজেলার সদ্য বিদায়ী আওয়ামীলীগ সভাপতি মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী ও বর্তমান মেয়র সাইদুর রহমান দেখা যায়। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে দাওয়াত খাওয়ার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই অনুষ্ঠানে এনাগ্রুপের চেয়ারম্যান এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোহুরা হক ছিলেন। প্রতিবন্ধী নির্যাতনের আসামীদের দাওয়াতের খবর ছড়িয়ে পড়লে শহর জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। স্পর্শ কাতর ঘটনার মামলার আসামীদের কেন এনাগ্রুপ দাওয়াত করল এমন প্রশ্ন প্রতিবন্ধী সংস্থার নেতাদের। যদি পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারে জোরালো অভিযান পরিচালনা করত তাহলে প্রকাশ্যে দাওয়াতে আসত না এবং এনাগ্রুপের এমন কান্ডে বইছে সমালোচনার ঝড়। ফেসবুকে এমন ছবি দেখে মামলার আসামী সাবেক মেয়র সদ্য বিদায়ী তানোর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি গোলাম রাব্বানীর মোবাইলে জামিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন জামিন হয় নি, অল্প সময়ের মধ্যে জামিন হব।
সেই সাথে সকল আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে তানোর থানা মোড়ে জাতীয় ও স্থানীয় প্রতিবন্ধী সংস্থার আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। দ্রুত গ্রেফতার না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন।
বক্তরা আরো বলেন, শামসুল আলম শারিরিক প্রতিবন্ধী।  তার দুপা অচল, সে ভালো ভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। দীর্ঘ দিন ধরে শামসুল উপজেলার প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে আসছেন। অথচ ফেসবুকে একটি কুরুচিপূর্ণ পোষ্ট কে বা কারা দিয়েছেন, সে আক্রোশে মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক ও বর্তমান মেয়র পাশবিক নির্যাতন করেছেন। জনপ্রতিনিধি হয়ে একজন প্রতিবন্ধীকে কিভাবে মেরে রক্তাক্ত করতে পারেন। দেশে আইন আদালত আছে, কেউ অপরাধ করলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে। কিন্তু মেয়র সাইদুর ও সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী কিভাবে গায়ে হাত দেন। বিশেষ করে বর্তমান মেয়র সাইদুর তার হাতের আঙ্গুলে থাকা পাথরের আংটি দিয়ে শামসুলের ডান চোখের নিচে ঘুষি মেরে মাংস তুলে ফেলেন। যদি ঘুষি টা চোখে লাগত তাহলে তার চোখ নষ্ট হয়ে যেত। এর চেয়ে ন্যাক্কার জনক কাজ আর কি হতে পারে। আস্থা প্রতিবন্ধী সংস্থার তানোর উপজেলার সাধারন সম্পাদক ইমরান হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, আমরা প্রতিবন্ধী হলেও আমাদের বড় পরিচয় আমরা মানুষ। প্রতিবন্ধী কে মেরে বাহুবা কুড়ানো যায় না। এটা বাহাদুরি কাজ না। প্রতিবন্ধী রা যাতে পরিবার সমাজ ও জাতীর কাছে বোঝা না হয় এজন্য বর্তমান সরকার নানা পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। আর জনপ্রতিনিধি হয়ে প্রতিবন্ধীর উপর সন্ত্রাসী কায়দায় পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হচ্ছে। মামলার পাচদিন অতিবাহিত হলেও একজন আসামী গ্রেফতার হয়নি। তাহলে কি প্রতিবন্ধী বলে কোন বিচার পাওয়া যাবে না। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করব দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করা হোক।
প্রসঙ্গত উপজেলার মুন্ডুমালা বাজারে ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে তানোর উপজেলার আস্থা প্রতিবন্ধী সংস্থার সভাপতি ও জাতীয় তৃনমুল প্রতিবন্ধী সংস্থার সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শামসুল আলমকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। খবর পেয়ে মুন্ডুমালা ফাড়ি পুলিশ উদ্ধার করে আহত শামসুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। এঘটনায় গত ৩ ফেব্রুয়ারী থানায় মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা সাইদুর রহমান ও সাবেক মেয়র উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী শামসুল আলম এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  মামলার পরও তারা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী তার রাজশাহী শহরের বাসায় থাকছেন এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। আমি পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করে বলব দ্রুত গ্রেফতার করুন। নচেৎ তারা পুনরায় হামলা করতে পারে। আমি আইনের প্রতিশ্রদ্ধাশীল।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *