প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি

রাজশাহী
মোঃ রওশন আলম,নওগাঁ: প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সনাতনী বিশ্বাস-মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা ও লালসা বিসর্জন দেওয়াই দুর্গাপূজার মূল তাৎপর্য।
এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে-এমন প্রত্যাশার মধ্য দিয়েই মঙ্গলবার  শেষ হয় দুর্গোৎসব।
পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজার বিজয় দশমীতে দর্পণ বিসর্জনসহ দেবী বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। এ সময় ঢাক-শঙ্খধ্বনি, মন্ত্রপাঠ, উলুধ্বনি আর অঞ্জলি চলে। ধান-দূর্বা, মিষ্টি, আবির দিয়ে ভক্তরা দেবীকে বিদায় জানান।
এদিন একদিকে ছিল বিদায়ের সুর, অন্যদিকে ছিল উৎসবের আমেজ। মান্দা উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপে চলে বিষাদে-আনন্দে বিদায় উৎসব। ‘মা তুমি আবার এসো’ ভক্ত কণ্ঠের এই আকুতি ছিল মণ্ডপে মণ্ডপে।
বিজয়া দশমীর অন্যতম আয়োজন ‘দেবীবরণ’। রীতি অনুযায়ী, সধবা নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান, যা সিঁদুর খেলা নামে পরিচিত।
করোনার কারণে গত দুই বছর দুর্গাপূজায় বিজয়া শোভাযাত্রা হয়নি। সেদিক থেকে এবারের দুর্গাপূজার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। তাই এবার বিজয়া শোভাযাত্রাকে ঘিরে উৎসাহ আর উদ্দীপনার বন্যা বয়ে যায়।  প্রতিটি নৌকায় দুর্গার পাশাপাশি লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমাও ছিল। সেই সঙ্গে ছিল উৎফুল্ল বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। তারা নেচে-গেয়ে শোভাযাত্রাকে আরও বর্ণিল করে তোলেন।  শোভাযাত্রার সময় রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ সতর্কাবস্থায় ছিল। রাস্তার দুপাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *