তানোর উপজেলা ভূমি অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলা ও ইউনিয়ন (ইউপি) ভূমি অফিস গুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্যে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি বেড়েছে। কেউ মানবাধিকার কর্মী, কেউ গণমাধ্যম কর্মী, কেউ নাগরিক সমাজ আবার কেউ সচেতন মহলের প্রতিনিধি ইত্যাদি লেবাসে দালালি করে খারিজ ও মিসকেস ফাইল পার করা হচ্ছে।উপজেলা ভুমি কিছু কর্মচারির সঙ্গে দালালদের রয়েছে গভীর সখ্যতা। কোনো সেবপ্রার্থী আশামাত্র কৌশলে তারা তাদের অনুগত দালালদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এসব দালালদের মাধ্যমে দরদাম করে সেবাপ্রার্থীদের কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা আদায় করা হচ্ছে।
এদিকে মুন্ডুমালা ইউনিয়ন ভূমি অফিস অনিয়ম ও দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) রাবিউল ইসলামের অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের হয়রানি বেড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের স্বদিচ্ছা থাকলেও মুন্ডুমালা ভূমি অফিসের কর্মকর্তার অনিয়ম ও দূর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না তার নানামূখী দূর্নীতিতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মুন্ডুমালা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একশ্রেণীর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারির খপ্পড়ে পড়ে প্রতিনিয়ত এলাকার সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে।
খারিজ (নামজারি), ভুমি উন্নয়নের অতিরিক্ত কর আদায়, আরএস বাণিজ্য, খাজনা দাখিল ও সিএস প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে  চরম হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এক কথায় কাজে ক্রটি থাক বা নাই থাক ভূমি সংক্রান্ত সব কিছুতেই সাধারণ মানুষকে টেবিলে টেবিলে মোটা অঙ্কের আর্থিক শুবিধা দিতে হচ্ছে। আর তা না হলে ফাইল নড়ে না সামনের দিকে। ভূমি সংক্রান্ত আইন-কানুন না জানার কারণেই মূলত সাধারণ মানুষ এমন প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে দিনের পর দিন জমির নানা রকম সমস্যা ঝুলে আছে বলে দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয় সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। কিন্ত্ত মুন্ডুমালা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আর্থিক সুবিধা না দিয়ে নামজারিসহ কোনো কাজই করতে পারছেন না সেবাপ্রার্থীরা। অনেক সময় দালাল ও এসব দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কারসাজিতে সাধারণ মানুষের সম্পত্তির প্রকৃত মালিকানা হেরফের হয়ে যাচ্ছে। এমনকি সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তিও বেহাত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
সুত্র জানায়, আর্থিক সুবিধা না দিলে নানা কারণ দেখিয়ে সেবাপ্রার্থীদের দিনের পর দিন হয়রানি করা হয়। সরকারিভাবে নর্ধারিত সময় (৪৫) দিন বেঁধে
দেওয়া হলেও এখানে যথা সময়ে নামজারি করা সম্ভব হচ্ছে না।
সেবাপ্রার্থীরা নামজারি করলেই আর্থিক সুবিধার হাতছানি ! চাওয়া লাগে না এমনিতেই আসে। ভূমি সংক্রান্ত জটিল ও কঠিন নিয়ম কানুন না জানায় এখানে সেবা নিতে আশা অধিকাংশ সেবাপ্রার্থী এক প্রকার বাধ্য হয়ে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্যই বসে থাকেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
তানোরের পঁচন্দর ইউপির বাসিন্দা আনারুল ইসলাম (৪৫) বলেন, একটি খারিজ কেসের জন্য তার কাছে থেকে তহসিলদার অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা নিয়েছেন। নাসির উদ্দীন (৩৬) বলেন, তার একটি খারিজ কেস সম্পন্ন করতে তার কাছে থেকে অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা নিয়েছেন তহসিলদার রাবিউল। তহসিলদার রবিউলের বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্ডুমালা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) রবিউল ইসলাম  এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাধারণ মানুষের উপকার করলে মানুষ খুশি হয়ে তাদের কিছু দেন এটা সত্য, তবে এটাকে অবৈধ বা ঘুষ বলা উচিৎ নয়।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *