তানোরে কর্মসূচির শ্রমিক প্রকল্পে কাজ না করে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের পুকুরে 

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মস্থান কর্মসূচির শ্রমিক প্রকল্পে কাজ না করে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদারের পুকুরে কাজ করছেন বলে নিশ্চিত করেন প্রকল্প সভাপতি কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপির)  সংরক্ষিত মেম্বার বেলী বেগম। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন (ইউপির)  শ্রীখন্ডা পালপাড়া গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন অলৌকিক প্রকল্পের কাজের ঘটনাটি। গত শনিবার কাজের উদ্বোধন করা হলেও তিন দিনে কোন কাজ করাননি প্রকল্প সভাপতি বেলী বেগম। এতে করে কর্মসূচির প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম করছেন প্রকল্প সভাপতিরা। এছাড়াও একই ইউপির ভবানীপুর গোরস্থানে মাটি ভরাটের প্রকল্প থাকলেও এখনো কাজ শুরু করেননি প্রকল্প সভাপতি মেম্বার আনিরুল। ফলে প্রতিটি প্রকল্পে সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি তুলেছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার বেলী বেগম বলেন, গত শনিবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদারের পুকুরে কাজ করছেন। আপনার প্রকল্প শ্রীখন্ডা পালপাড়া  আইয়ুব মাস্টারের বাড়ি হতে ষষ্ঠী পালের বাড়ি পর্যন্ত পুকুরে কিভাবে কাজ হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদার ও চেয়ারম্যান বলেছে এজন্য সেখানে কাজ করছে। প্রকল্পের কাজ রেখে ভাইস চেয়ারম্যানের পুকুরে কাজ করার কোন অনুমতি আছে কি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান সব অনুমতি নিয়েই কাজ করছেন, তাছাড়া কাজ কেন করবে।
ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদার বলেন, প্রকল্পের রাস্তায় ২০ দিন ও পুকুরে ২০ দিন কাজ করবে।কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপির)  চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি ফরহাদ বলেন, আমি কাজের বিষয়ে কিছুই জানিনা।
সরেজমিনে দুপুরের আগে দেখা যায়, কামারগাঁ ইউপির শ্রীখন্ডা পালপাড়া আইয়ুব মাস্টারের বাড়ি হতে ষষ্ঠী পালের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১৫০ মিটার মাটির রাস্তায় কোন শ্রমিক দেখা যায় নি। স্থানীয় কিছু মহিলা ও বয়োজ্যেষ্ঠ পুরুষরা বলেন, গত রবিবার মহিলা মেম্বার বেলী বেগমের স্বামী আলমগীর এসে রাস্তার পাশে ছোট কুড়ি থেকে মাটি নিবে বলেছে। কিন্তু কুড়িতে পানি আছে, অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে সংস্থার করা যাবে। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তা দিয়ে হাটা যায় না। তিন দিনে কেউ আসেনি কাজ করতে। এপ্রকল্পে ২৬ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা।এদিকে এক কুদাল মাটি পর্যন্ত ফেলা হয়নি ভবানীপুর গোরস্থানেও। কোন শ্রমিকেও দেখা যায়নি। এপ্রকল্পে শ্রমিক সংখ্যা ২৬ জন।
 প্রকল্প সভাপতি মেম্বার আনিরুল বলেন গোরস্থান যেখান থেকে মাটি ফেলা হবে সে জমির ধান কাটা হয়েছে, উত্তোলন হলে মাটি ফেলা হবে। তিনি আরো বলেন, পার্শ্বেই মাদারিপুরে স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে সেখানে কাজ করেছে। কোন শ্রমিক দেখা যায়নি আর আপনার প্রকল্প গোরস্থানে সেখানে কাজ করা হয়নি এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও কোন শ্রমিক দেখা যায়নি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, আমি বাহিরে আছি পরে কথা হবে বলে দায় সারেন।
পিআইও এটিএম কাউসার আলী বলেন, আপনি জানালেন আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তিন দিন ধরে কোন কাজ হয়নি ব্যবস্থা গ্রহণ হবে কিনা জানতে চাইলে একই ধরনের কথা বলে তিনিও দায় সারেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, কাজ না করলে টাকা পাবেনা। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ১৬ প্রকল্পের বিপরীতে শ্রমিক সংখ্যা ৪৪৬ জন। প্রতিদিন একজন শ্রমিক ৪০০ টাকা করে পাবেন। সে হিসেবে ১৬ প্রকল্পে ৪৪৬ জন শ্রমিকের বিপরীতে প্রায় ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্প প্রচুর পরিমানে অনিয়মের অভিযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *