‘‘একজন মাষ্টার মশাই” স্বরণ এবং স্মরণিকা প্রকাশ

রাজশাহী

আব্দুল হামিদ মিঞা,বাঘা: গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ৫কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কখনো বাইসাইকেলে আবার কখনো পায়ে হেটে আসা যাওয়া করতেন, বাঘা উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পোশাকেও ছিলনা তেমন আধুনিকতা। চলাফেরা, আচার আচরনে ছিলেন সাদা সিদে। কর্তব্য,দায়িত্ববোধে ছিলেন নিষ্ঠাবান। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে ছিলেন প্রিয়ভাজন-স্নেহভাজন। অনেকেই জানতেন ইংরেজির একজন পন্ডিত হিসেবে। প্রয়াত শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম(অবঃ)কে স্বরণ এবং স্মরণিকা প্রকাশ উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্যকালে এমন কথাই বলেছেন বিশিষ্টজনরা। ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসের দিনে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ৮৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরন করেন গুনি শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম(অবঃ)।

মৃত্যুর ৫০তম দিনে, সোঁদা মাটির গন্ধ মাখা একজন মাষ্টার মশাই, স্বরণ এবং স্মরণিকা প্রকাশ উপলক্ষে শুক্রবার(২৪-১১-২০২৩) বিকাল ৪ টায় মরহুমের সরেরহাট গ্রামের বাসভবন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করে তার পরিবার ।

এ উপলক্ষে বিশিষ্টজনকে দেওয়া আমন্ত্রণ পত্রে লেখা হয়েছে, মানুষ আজীবন বাঁচে না তবুও কিছু মানুষকে হারাতে মন চায় না। যার হারাই সে-ই বুঝে ;সোঁদা মাটির গন্ধ মাখা একজন শিক্ষক যার সাধারন জীবন অনুপ্রাণিত করে, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিলাসী জীবনকে যিনি এক ঝটকায় না বলতে পারেন, তাঁর চলে যাওয়া আমাদের অনেক বেশি পোড়ায়। প্রফেসর নুরুল ইসলামের চলে যাওয়া যে ক্ষত তৈরি করেছে তা শুকিয়ে যাবে না কোনদিন। পরিবারের সাথে এই হারানো অনেককেই করেছে শোকাচ্ছন্ন,অভিভাবকহীন।

এদিন মাগরিব পর মরহুমের স্নৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক-ছাত্র ও বিশিষ্টজনরা। অন্যান্যর মধ্যে ছিলেন-গড়গড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম. অধ্যক্ষ (অরপ্রাপ্ত) আনিসুর রহমান, প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম(বাচ্চু), প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীন,প্রয়াত শিক্ষকের বন্ধু সেনা সদস্য (অবঃ) শফিউর রহমান, ছাত্র ও বিশিষ্ট সাংবাদিক আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ,জাহেদুল ইসলাম(স্বপন),জিয়াউল হক, কলেজ শিক্ষক সানোয়ার হোসেন, প্রয়াত শিক্ষকের ছেলে নাট্যকর,নির্মাতা শিমুল সরকার,ভাতিজা বাবু ইসলাম প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন-ফেরদৌস আরিফ পিন্টু। উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিয়া,আ’লীগ নেতা কামাল হোসেনসহ শিক্ষক,সাংবাদিক সুধিজন ।

এর আগে একজন মাষ্টার মশাই স্বরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন- প্রয়াত শিক্ষকের স্ত্রী খালেদা ইসলাম সরকার মুক্তা,সংগীত শিল্পী আবুল সরকার বাবু।
প্রকাশিত স্বরণিকায়-‘আমার প্রিয় শিক্ষক একজন নূরুল স্যারের স্বরণে’, শিরোনামে লিখেছেন, শাহদৌলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) আবু বকর সিদ্দিক,আজকের পত্রিকার ব্যবস্থপনা সম্পাদক কামরুল হাসান শিরোনাম দিয়েছেন-‘তাঁর কাছে ঋন আছে’, লেখক,সাংবাদিক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ শিরোনাম দিয়েছেন‘আমি নূরুল স্যারের আজীবন ছাত্র’, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেছের আলীর শিরোনামটি হলো-‘আমার শিক্ষক নূরুল ইসলাম ’,বাউল শিল্পী ফকির শফি মন্ডল এর শিরোনামটি-‘তাঁর বানী আমার আগামী পথচলার অনুপ্রেরণা’,গোলাম ফারুক শিরোনাম দিয়েছেন-‘স্যারের স্নৃতি ’,সংগীত শিল্পী, কৃষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজের সহকারি অধ্যাপক, সরকার আমিরুল ইসলামের শিরোনামটি-‘সব কবি কবি নন,’অধ্যাপিকা(বাংলা সাহিত্য-কুষ্টিয়া) মর্জিনা খাতুনের শিরোনমটি-‘আমার দুলাভাই একজন মানবিক মানুষ’, ‘শিক্ষার ফেরিওয়ালা’ শিরোনামে লিখেছেন সংগীত শিল্পী বাবু সরকার ও ‘সরি আব্বু’ শিরোনামে শিবলী সরকার,‘যেখানে গিয়ে আমরা ইংরেজি শিখবো’ শিরোনামে মিডিয়া কর্মী রতন-‘আমার এক জীবনের পাপ’শিরোনামে লিখেছেন মরহুমের ছেলে-নাট্যকর,নির্মাতা শিমুল সরকার।

পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, বাঘা উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত শাহদৌলা সরকারি কলেজটি, সরকারি করণের আগে ১৯৭৮ সালে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১২ সালে অবসরগ্রহণ করেন।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *