সাপাহার বাসির হৃদয় জয় করলেন  ইউএনও মামুন

রাজশাহী
মোঃ রওশন আলম,নওগাঁ: ইউএনও আব্দুল্যাহ আল মামুন নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল যোগদানের পর হতে গত ২ বছর ৮ মাসে উপজেলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ক্রীড়া, পর্যটন সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে সাপাহারকে আধুনিক ও মডেল উপজেলায় রুপান্তর করেছেন।
সম্প্রতি জারী হওয়া তার  বদলির আদেশে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ  একজন সৃজনশীল, চৌকস ও জনবান্ধব ইউএনওকে হারানই দুঃখ প্রকাশ করছেন। চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে সব জায়গায় মূল আলোচনা ইউএনও মামুন আর কিছুদিন এ উপজেলায় থাকলে সাপাহারের আরো অনেক উন্নতি হতো।
তিনি ২০২১ সালে এ উপজেলায় যোগদানের পর চলমান করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলার প্রতিটি প্রান্তে ছুটে গিয়ে মানুষকে ঘরে থাকতে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে অনুরোধ করেন এবং বাড়ী বাড়ী গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি ও তার পরিবারে সদস্যরা পরপর দুইবার করোনা আক্রান্ত হন। সে সময়  ইউএনও মামুনের আন্তরিকতা ও সেবার মনোভাবের জন্য তিনি সর্বমহলে প্রশংসিত হন। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে কোভিড কালীন শিক্ষার ঘাটতি পূরণে তিনি নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার স্বীকৃতি স্বরূপ দুই বার জেলা এবং একবার বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইউএনও নির্বাচিত হন। পাশাপাশি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রাপ্ত হন।
করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার পাশাপাশি আধুনিক ও মডেল সাপাহার উপজেলা বিনির্মাণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুনের উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলো স্থানীয়দের মাঝে বেশ প্রসংশিত হয়। যার মধ্যে রয়েছে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করতে এবং ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দৃশ্যকল্প ফুটে তুলতে “জয়বাংলা চত্বর” নির্মাণ। সারাদেশে আম্রপালি আমের জন্য প্রসিদ্ধ উপজেলা সাপাহারকে ব্র‍্যান্ড হিসেবে পরিচিত করতে নির্মাণ করেছেন “আম চত্বর”। তরুন প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ, মাদক থেকে দূরে রাখা এবং বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় টেনিস খেলার সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নির্মাণ করেন “সাপাহার টেনিস কোর্ট”। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিকাশে উপজেলা পরিষদ চত্বরে “মুক্তমঞ্চ” নির্মাণ সহ নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ও স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা নিয়মিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের হাটাহাটির জন্য উপজেলা পরিষদ পুকুরের চারপাশে “পদাঙ্ক” নামক  হাঁটার পথ নির্মাণ করেছেন। এছাড়া “নিকুঞ্জ” নামক উপজেলা প্রশাসন বাগান, “ব্র্যান্ডিং সাপাহার”, উপজেলা পরিষদ মূল ফটক (বাস্তবায়নাধীন), “টেরাকোটা সম্বলিত ত্রিমাত্রিক মানচিত্র”, নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি সাপাহারের ঐতিহ্যবাহী জবই বিল কেন্দ্রিক পর্যটন আকর্ষণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে “জবই বিল মাছ চত্ত্বর”, “জবই বিল সেলফি পয়েন্ট”, “বিল বিলাস” নামক বসার স্থাপনা, “ব্র্যান্ডিং জবই বিল”, তথ্যচিত্রে জবই বিল (বাস্তবায়নাধীন) ও বিল পাড়ে বসার বেঞ্চ নির্মাণ করেছেন। “শোভিত কানন” মানে জবই বিলে শোভাবর্ধক বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। প্রচন্ড খরায় প্রায় শুকিয়ে যাওয়া বিলের হুমকির মুখে পড়া মৎস্য সম্পদ রক্ষায় বিলের চারটি অংশে অভয়াশ্রম ঘোষণা, মাছ শিকার নিষিদ্ধ, পাহারাদার নিযুক্ত, ও পানি সেচের ব্যবস্থা করে জবই বিলের মা মাছ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করেন। এছাড়া, তার উল্লেখ্যযোগ্য উদ্যোগগুলো হলো “অমরপুর আশ্রয়ণ মসজিদ” নির্মাণ, পরিষদ চত্ত্বরের সকল কোয়াটার মেরামত ও সংস্কার, অফিস ও কনফারেন্স রুম ডেকোরেশন, পরিষদ চত্বর সিসিটিভি এর আওতায় আনা,  “শেখ রাসেল শিশু পার্ক” নির্মাণ (বাস্তবায়নাধীন)।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, “উপজেলা নির্বাহী অফিসারে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি সাপাহারকে মডেল উপজেলা হিসেবে বিনির্মাণ ও পরিচিত করার লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ গ্রহন ও বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি এবং সকলের সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *