ফতুল্লায় প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে কিশোরের গুলি, ভিডিও ভাইরাল

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে এক কিশোরের উৎফুল্লভাবে গুলি ছোঁড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে কবিরুল ইসলাম নামের এক গণমাধ্যমকর্মীর ফেসবুক টাইমলাইনে ওই ভিডিওটি প্রথমে আপলোড হয়। এরপর থেকেই তার ওই পোস্ট এবং ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

গণমাধ্যমকর্মী কবিরুল ইসলাম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডির টাইমলাইনে ভিডিওটি আপলোড করে বারো লাইনের একটি পোস্ট লিখেন। সেই পোস্টে তিনি দাবি করেন, কিশোরটি পাগলা বৌবাজার এলাকার কালা জাহাঙ্গীরের ছেলে সন্ত্রাসী সোহান। তবে পিস্তলটি আসল নাকি খেলনা পিস্তল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ফুলহাতা গেঞ্জি পরিহিত এক কিশোর পিস্তল উঁচিয়ে একটি গুলি ছুঁড়ে। ভিডিওটিতে দেখে বুঝা যাচ্ছিল- গুলি এক্সছোঁড়ার সময় স্বেচ্ছায় ওই কিশোর গুলি ছোঁড়ার ওই দৃশ্য মোবাইলে কাউকে দিয়ে ধারণ করায়। ভিডিওচিত্রটি ধারণকাী গুলি ছোঁড়ার আগে ওই মুহূর্ত সময়ের গণনা করছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকের স্ট্যাটাসে গণমাধ্যমকর্মী কবিরুল যা লিখেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘ভিডিওটা দেখে আতকে উঠেছি। প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রশিক্ষন নিচ্ছে সোহান নামের এ সন্ত্রাসী। এটা ফতুল্লা থানার পাগলা বৌবাজার এলাকার কোন এক স্থান থেকে ধারন করা৷ এভাবে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী অস্ত্র প্রশিক্ষন ভীতির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। এমনিতেই কুতুবপুর ইউনিয়নকে সবচেয়ে আতংকিত এলাকা হিসেবে বিচার করা হয়। এমন একটা সময়ে এ ভিডিওটি প্রকাশ পেলো যখন কুতুবপুরে চলছে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাম রাজত্ব। বৌ বাজার এলাকার কালা জাহাঙ্গীরের পুত্র সন্ত্রাসী সোহানকে গ্রেফতার করলে এই অস্ত্র ও তার মদদ দাতাদের নাম পাবে প্রশাসন। আর আটক করতে না পারলে অশান্ত কুতুবপুরে খুন খারাবি চলবেই।’

ভিডিওটির ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে কবিরুল ইসলাম পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমি ফতুল্লা থাানা এলাকার একজন স্থানীয় বাসিন্দা। রোববার দুপুরে আমার এলাকার এক ছেলে আমার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিওটি আমাকে পাঠায়। ভিডিওটি দেখে এবং এলাকার আরও কয়েকজনের সাথে কথা বলে আমি নিশ্চিত হই পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছোঁড়া ছেলেটি আমাদের পার্শ্ববর্তী পাগলা কুতুবপুর এলাকার সোহান। যে কিনা জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী মীরুর ভাগিনা সন্ত্রাসী শাকিলের ক্যাডার বাহিনীর সদস্য। সন্ত্রাসী মীরু ও শাকিলের বর্তমানে ডান হাত হিসেবে কাজ করছে।

কবিরুল বলেন, যেহেতু আমি ঢাকায় স্পোর্টস রিপোর্টার হিসেবে কাজ করি, তাই এ নিয়ে সাধারণ সংবাদ প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব না।

ভিডিওটি আপলোড করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ফেসবুক আইডির সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলার অধিকাংশ সাংবাদিক ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থার ব্যক্তিরা সম্পৃক্ত আছেন। বিষয়টি তাদের নজরে আনতে আমি ভিডিওটি পোস্ট দিয়ে ছেলেটির পরিচয় তুলে ধরেছি। গণমাধ্যমের একজন পেশাদার কর্মী হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকেই সমাজের সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই বিষয়টি আমি তুলে ধরেছি।

সাংবাদিক কবিরুল আরও বলেন, একটা কিশোর যেভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, এটা আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর ও দু:খজনক ব্যাপার। তার কারণে পুলিশ প্রশাসন বিতর্কিত হতে পারে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারেন। এসব সার্বিক বিষয় চিন্তা করেই কবিরুল ভিডিওটি আপলোড করেছেন বলে জানা।

এদিকে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন পূর্বপশ্চিমকে বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ফেসবুকে কেউ এমন ভিডিও প্রকাশ করে থাকেন তাহলে সেটা আমরা যথা শিগগিরিই খতিয়ে দেখব।

ওসি আসলাম হোসেন আরও বলেন, ফেসবুকের পোস্টে যে ছেলেটির কথা এবং ঘটনার স্থান হিসেবে যে এলাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, বাস্তবে ওই ছেলেই কিনা এবং ফতুল্লা থানা এলাকার কিনা সে বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখব। যদি তা সত্য হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই অস্ত্র প্রদর্শনকারী ওই ছেলেকে আমরা খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে অস্ত্র উদ্ধার করব। সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি।

স্ব.বা/শা