স্টাফ রিপোর্টার: নাটোরের বড়াইগ্রামে আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর চার মাস পর শ্রমিক নেতা শেখ ইয়াকুব আলী হীরার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল বুধবার এ লাশ উত্তোলন করা হয়। গতকাল সকালে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোর্তুজা খান এবং বড়াইগ্রাম থানার উপ পরিদর্শক আহসান হাবীবের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
প্রসঙ্গত মৃত শেখ ইয়াকুব আলী হীরা ২টি বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী মৌটুসি আখতার মুক্তা নি: সন্তান এবং মৃতের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ২টি কণ্যা ও ১টি পুত্র সন্তাণ রহিয়াছে। মৃত শেখ ইয়াকুব আলী হিরার সঙ্গে কয়েকমাস যাবৎ তার বাড়াইগ্রামের বাড়ী তার স্ত্রীর নামে লেখে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন এবং এর ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। গত ১৭ই জুন ইয়াকুব আলী রাত ১২টার পর বাড়ি যান এবং তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। হঠাৎ ওই দিন গভীর রাতে তিনি মারা যান।
মৃতের মরদেহের কোন ময়নাতদন্ত হয়নি এবং মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোন পুলিশ কেস অথবা ডাক্তারী পরীক্ষার সনদও নেয়া হয়নি ও কোন ব্যাক্ষা দেয়নি। মৃতের দ্বিতীয় নি:সন্তান স্ত্রী জনতা ব্যাংকে মৃতের রক্ষিত ৩০লাখ টাকা , বাড়িতে রাখা টাকা মৃতের সন্তানকে না জানিয়ে লোপাট করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। শ্রমিক নেতা শেখ ইয়াকুব আলী হীরার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মৃতের কণ্যা ঈশিতা ইয়াসমিন (২৬) গত ২৫ আগস্ট বাদী হয়ে নাটোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আদালতে তার সৎমা ও তার আত্মী-স্বজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত ২৭ আগস্ট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তার মেয়ের আনীত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ প্রদান করেন। এর পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়নাতদন্তের আবেদনের করলে নাটোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, আদালত নং-১ খোরশেদ আলম ময়াাতদন্তের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং রাজশাহী ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, নাটোর সিভিল সার্জন, নাটোর আরএমওকে নির্দেশ দেন এবং আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে প্রদান করার নির্দেশ দেন।
নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের ( জুডিশিয়াল মুন্সিখানা) সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মর্তুজা খানকে নিয়োগ দেয়া হয়। জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখা নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যলয় এর সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোছা: তাছমিনা খাতুন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়। স্মারক নং-০৫.৪৩.৬৯০০.০১২.৯৯.০০১.১৯৫৭২ অফিস আদেশে বলা হয় নাটোর বড়াইগ্রাম থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস.এম. আহসান হাবীব এর ৩০/০৮/২০১৯ তারিখের ২২৬৫ নং স্মারকে প্রাপ্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে মৃত: শেখ ইয়াকুব আলী এর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করানোর লক্ষে এ কার্যলয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: মর্তুজা খানকে নিয়োগ দেয়া হল।
এরপর উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট এর উপস্থিতিতে শেখ ইয়াকুব আলী হীরার লাশ গতকাল বুধবার কবর থেকে উত্তোলন করে সুরহাতল শেষে কনস্টবল সুধীরের পহরায় লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আনা হয়। এর বিকেল সোয়া ৪টা থেকে পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর পুনরায় হীরার তার লাশ দাফন করা হয়।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেন, ময়নাতদন্ত সম্পর্ন হয়েছে।
ছবির ক্যাপশান: নাটোরের বড়াইগ্রামে আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর চার মাস পর শ্রমিক নেতা শেখ ইয়াকুব আলী হীরার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে আনা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ আবারো দাফন করা হয়।
স্ব.বা/শা