গণভবনে অনুপ্রবেশকারী, রাজশাহী আ’লীগে বইছে সমালোচার ঝড়

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে জেলায় পাঠানো চিঠিতে অনুপ্রবেশকারীদের দলীয় পদে না রাখা এবং নতুন করে পদ না দেয়ার পরিষ্কার নির্দেশনা ছিল। এছাড়া বেশ কিছু দিন ধরে প্রধানমন্ত্রীসহ দলের শীর্ষ নেতারাও অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন তৃণমূলকে। এতকিছুর পরও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কমিটির নেতারা শীর্ষ অনুপ্রবেশকারী আবদুল মজিদ মাস্টারকে নিয়েই গণভবনে ঢুকলেন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে ফুল দিলেন।

এ সংক্রান্ত ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর রাজশাহী আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচার ঝড় বইছে।

দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, আবদুল মজিদ মাস্টার বর্তমানে গোদাগাড়ীর কাকনহাট পৌরসভার মেয়র ও কাকনহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। মজিদ মাস্টার ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি রাজশাহী-১ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তখন মজিদ মাস্টার ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি কাকনহাট পৌর বিএনপির সভাপতি ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি রাজশাহী জেলা বিএনপিরও সদস্য ছিলেন। একসময় তিনি জাতীয় পার্টিও করতেন।

গত ৮ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে মেরাজ উদ্দিন মোল্লাহকে সভাপতি ও আবদুল ওয়াদুদ দারাকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটি নিয়ে তীব্র আলোচনার রেশ না কাটতেই নবনির্বাচিত কমিটির নেতারা গত ১১ ডিসেম্বর গণভবনে যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এই দলে মেরাজ ও দারা ছাড়া নতুন কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক আয়েন উদ্দিন ও সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ছিলেন। ১৩ জনের এই দলে ঢুকে পড়েন বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা মজিদ মাস্টারও।

সূত্র বলছে, মজিদ মাস্টার বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তিনি ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ডান হাত ছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে রাজশাহীতে মজিদের কথাই ছিল শেষ কথা। প্রশাসনের কর্মকর্তারা মজিদের ভয়ে তটস্থ থাকতেন। আওয়ামী লীগের জেলা ও গোদাগাড়ী উপজেলা কমিটির প্রবল বিরোধিতা উপেক্ষা করেই মজিদ মাস্টার আওয়ামী লীগে ঢোকেন। কারও কথায় কর্ণপাত না করে ফারুক চৌধুরী তাকে দলে নেন। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে তিনি কাকনহাট পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নও বাগিয়ে নেন।

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লাহ বলেন, মজিদ মাস্টার আমাদের সঙ্গে যাননি। সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে তিনি আগেই গণভবনে ঢুকে বসেছিলেন। আমরা গণভবনে গিয়ে তাদের দু’জনকে একসঙ্গে বসে থাকতে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিতে যাওয়ার সময় তিনি যে কখন সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন খেয়াল করিনি। মজিদ মাস্টার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের তালিকায় ছিলেন না। আমরা তার বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না।

জানতে চাইলে মজিদ মাস্টার বলেন, আমি আমার এলাকার এমপি ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে এক গাড়িতে বুধবার বিকালে গণভবনে যাই। জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন এটা জেনেই সেখানে যাই। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি। সূত্র: যুগান্তর

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *