পুলিশ তদন্তে ধর্ষণের পর হত্যা, দেড় মাস পর ওই কিশোরী জীবিত উদ্ধার

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার এক কিশোরীকে দেড় মাস পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে চলছে ব্যাপক তোলপাড়। রহস্য উন্মোচনে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। উদ্ধার কিশোরীর নাম জিসামণি। সে শহরের দেওভোগ এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।

নিখোঁজের এক মাস পর মামলা হলে পুলিশ বন্দর এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে। তারা হচ্ছে বন্দরের বুরুমদি এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ, পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে অটোরিকশা চালক রকিব ও বন্দরের ইস্পাহানী এলাকার মাঝি খলিল।

তারা ৯ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন হোসেন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ূন কবিরের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ জানায়। তিনজন বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেল হাজতে রয়েছে।

ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি), এএসপি (ট্রাফিক) ও ডিআইও ওয়ান।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, রোববার বন্দরের কুশিয়ারা এলাকার একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে জিসার মার কাছে কল আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে জিসা তার মাকে বলে, আমি বেঁচে আছি। তোমরা আমাকে ৪ হাজার টাকা পাঠাও। আমি চলে আসব। জিসার মা ফোনে তাৎক্ষণিক বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান। এরপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ওই দোকানে যায় পুলিশ। জিসাকে টাকা নেয়ার জন্য আসতে বলে। জিসা দোকানে এলে তাকে থানায় আনা হয়।

জিসা পুলিশকে জানায়, ইকবাল নামে এক ছেলেকে দেড় মাস আগে বিয়ে করে বন্দরের কুশিয়ারা এলাকায় বসবাস করছে তারা। পরে ইকবালকে আটক করে থানায় আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জিসা মনি জানায়, ইকবালকে বিয়ে করে তাদের বাড়িতে ছিল সে। তাকে কেউ ধর্ষণ করেনি। সে সুস্থ আছে। বাবা মায়ের কথা মনে পড়ায় ফিরে এসেছে।

৪ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিল জিসামণি। ১৭ জুলাই এ ব্যাপারে সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। মেয়েকে না পেয়ে ৬ আগস্ট সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা করেন জিসার বাবা। তদন্তের দায়িত্ব পান সদর মডেল থানায় পরিদর্শক শামীম আল মামুন।

অপরদিকে কারাগারে থাকা আবদুল্লাহর মা শিউলী আক্তার বলেন, আবদুল্লাহ ওয়ার্কশপে কাজ করত। বিনাদোষে আজ জেলে। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চান। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তাকে দশ হাজার টাকা দেয়ার পরও তারা আমার ছেলেকে মাইরা মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়াইছে।’

এসআই শামীমের বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার অভিযোগ করেন নৌকার মাঝি খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তারও। রকিবের মা রাশিদা জানান, ‘ছেলেকে বিনা দোষে জেলে পুরা হল। পুলিশ টাকাও নিল।’

রকিবের ভাই সজিব জানান, রিমান্ড এবং ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে দুই দফায় ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *