স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি থেকে প্রায় ৫২ কেজি গাঁজা জব্দ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে নগরীর বোয়ালিয়া থানা মোড় এলাকায় সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে একটি খাটের ভেতরে বিশেষ কায়দায় এই গাঁজা আনা হয়েছিল।
র্যাব রাজশাহী-৫ অভিযান চালিয়ে ওই মাদক জব্দ করার পাশাপাশি মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে হাতেনাতে আটক করেছে।
খাটসহ একটি ডাইনিং টেবিল ও ছয়টি চেয়ার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়রের উদ্ধৃতি (রেফারেন্স) দিয়ে কুমিল্লা থেকে বুকিং দেওয়া হয়েছিল। মেয়রের ভাগ্নি জামাতা জিএম আরিফের সুপারিশে রাজশাহীতে আসে ওই গাঁজাভর্তি ফার্নিচারগগুলো।
মাদকচক্রের আটককৃতরা হলেন, পবা উপজেলার দুয়ারী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে দুলাল, তানোরের দেউরাতলার ফজর আলীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন, মৃত আফসার আলীর ছেলে বাদশা ও সিধাইড় এলাকার মেরাজ উদ্দিনের ছেলে সোহান আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বেলতলী এলাকার সুলতান আহমেদের ছেলে মুকতুল হোসেন ও মাদলা এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে বাপ্পি।
তাঁদের মধ্যে বাপ্পি ও মুকতুল কুমিল্লায় ৫১ কেজি ৯০০ গ্রাম গাঁজা বিশেষ কায়দায় খাটের মধ্যে লুকিয়ে বুকিং দেন। পরে বাসে চড়ে রাজশাহীতে গিয়ে তাঁরা ওই ফার্নিচারগুলো গ্রহণের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন।
মুকতুলের মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে ০১৯২৭৯৮৫৯৮৮। কুমিল্লায় বুকিং দেওয়ার সময় সেখানে হুমায়ুন কবির নামের এক ব্যক্তির ঠিকানায় বুকিং দেওয়া হয়। সেখানে মোবাইল নম্বর দেওয়া হয় ০১৭১৫৭৩১২১৫। তবে মুকতুল ও বাপ্পি মিলেই কুমিল্লায় ফার্নিচারের মধ্যে মাদক বুকিং করেন।
কুমিল্লায় সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম অপু ও ধর্মপুর শাখায় বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা জসিম উদ্দিন জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে কুমিল্লা শহরের রেসকোর্সের রেডরুফ ইন হোটেলের কর্মচারী সোহেল ২০টি ফার্নিচার পণ্য নিয়ে আসেন। তিনি কুমিল্লা থেকে হুমায়ুন কবিরের নামে বুকিং দিয়ে রাজশাহীতে মুকতুল হোসেনের কাছে পাঠাতে বলেন। ঠিকানায় তাঁরা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়রের রেফারেন্স ব্যবহার করেন।
কুরিয়ার সার্ভিসের ওই দুজন জানান, কুরিয়ার পাঠাতে বিল আসে ১৩ হাজার টাকা। তখন মেয়রের ভাগ্নি জামাতা জিএম আরিফ ফোন করে বিল কমানোর অনুরোধ করেন। হোটেলের কর্মচারী ফারুকও ফোন করে একই অনুরোধ করেন। তখন মেয়রের সম্মানে বিল কমিয়ে আট হাজার টাকা করা হয়।
ধর্মপুর শাখায় বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা জসিম উদ্দিন আরো জানান, রেডরুফ ইনের কর্মচারী সোহেলের সঙ্গে আরেকজন ছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাদের ছবি আছে।
জানা গেছে, হোটেল রেডরুফ ইনের মালিক কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। মেয়রের স্ত্রীর ভাগ্নি জামাই আরিফ এই হোটেলের জিএম। তাঁর বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। সূত্র: সিল্কসিটি নিউজ।
এদিকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করে মেয়রের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
স্ব.বা/শা