স্টাফ রিপোর্টার: শীত এসে শীত চলে যাচ্ছে তবুও দেখা মিলছে না শীতকালের প্রিয় সুস্বাদু খাবার খেজুরের রস। অথচ শীত না পড়তেই গ্রামে গ্রামে পাড়া মহল্লায় দেখা মিলতো কলস ভর্তি খেজুরের রস গাছিদের বিক্রি করতে। কিন্তু কালের বিবর্তনে বর্তমানে প্রায় ২/৩ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে না শীত কালের সুস্বাদু খাবার খেজুর রসের।
একসময় বরেন্দ্র অঞ্চল তানোরের বিভিন্ন গ্রামে খেজুর গাছ ভাগা দিয়ে গাছিরা রস সংগ্রহ করতেন। যাদের খেজুর গাছ আছে তাদের কে গাছিরা রস সংগ্রহ করে একদিন গাছ মালিকদের দিতেন আর একদিন গাছি রস নিতেন। বর্তমান যুগের পরিবর্তনে প্রায় বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ। আর দুই একটা খেজুর গাছ দেখা গেলেও পাওয়া যাচ্ছেনা রস সংগ্রহ করা গাছিদের। তানোর পৌর এলাকার গুবির পাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, প্রায় ২৫বছর ধরে তাদের প্রায় ১৫ থেকে ২০টি মত খেজুর গাছে লোক মারফত দিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করে আসছেন।
এতে করে যেই গাছি তাদের খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে দিতেন তাকে পালা পালি ভাবে একদিন রস দিতেন আর একদিন তারা রস নিতেন। এতে করে শীতের শুরুতেই তাদের খেজুর গাছ পরিস্কার করে খেজুরের রস সংগ্রহ করতেন তারা। তবে প্রায় ৪বছর ধরে কোন গাছি না পাওয়ায় আর খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে পারছেন না তারা। খেজুর গাছের রস সংগ্রহকারী গাছি তারেক আলী জানান, তিনি একসময় তানোর পৌর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতেন। খেজুর রসের চাহিদাও ছিলো খুব ভালো। রস বিক্রি হত ১০ থেকে ২০টাকা কেজি দরে।
তারেক আলী আরো বলেন, তিনি প্রতিদিন সন্ধায় প্রতিটি খেজুর গাছে রস সংগ্রহের জন্য মাটির কলস ও হাঁড়ি টাঙিয়ে আবার সকাল থেকে প্রতিটি গাছে চড়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করতেন। এতে করে সকাল থেকেই খেজুরের রস কিনতে ভীড় জমাতে শুরু করতেন ক্রেতারা। কিন্তু এখন আর তেমন খেজুরের গাছ দেখা যাচ্ছে না, যে দুই একটা গাছ দেখা গেলেও গাছে মিলছেনা তেমন রস।
তাই তিনি প্রায় ৫বছর ধরে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা ছেড়ে দিয়েছেন বলে তিনি আরো বলেন, বর্তমান যুগের পরিবর্তনে খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। যার ফলে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে শীতকালীন খেজুর গাছের রস। তবে এখনো সময় আছে খেজুর গাছের রসের ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিটি মানুষের খেজুর গাছ লাগানো উচিৎ। নয়তো আগামীতে আর কোনদিন খেজুর গাছের রস পাওয়া তো দূরের কথা খেজুর গাছ পযর্ন্ত দেখা মুসকিল হয়ে পড়বে বলে জানান তিনি।