তানোরে ভেড়ীসহ উপকরন বিতরনের নামে লুটপাট

রাজশাহী লীড

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে সমতল অনুগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে বিনা মুল্যে বর্তমান সরকার মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভেড়ীও থাকার ঘর এবং ঔষুধ বিতরনের নামে হরিলুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের মাধ্যমে ৪০০ পরিবারের মাঝে ৮০০ ভেড়ী, দুটি করে ৮০০ ডেউ টিন, চারটি করে ১ হাজার ৬০০ সিমেন্টের খুটি ও ৫ টি করে ২ হাজার ফরমেট এবং কৃমি, ভিটামিন ঔষুধ বিতরন করা হয়েছে। এতে সর্বমোট বরাদ্দ প্রায় ৬০ লাখ টাকা বলে জানান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্ততা ডা: বিল্লাল উদ্দিন।

তিনি আরো জানান, এসব মালামাল আমরা ক্রয় করিনি সবকিছু ক্রয় করেছে মৎস্য প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয়। আমরা বিতরন করেছে। বিতরন অনুষ্ঠান করতে যা খরচ হয়েছে সেটা আমাদেরকেই বহন করতে হয়েছে। বর্তমান সরকার মহামারির মধ্যে এসব বিতরন যা কল্পনাতীত। একটি ভেড়ীর দাম সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা এবং টিন খুটিরও অধিক মুল্য ধরে আসে ২০ লাখের মত জানতে চাইলে তিনি জানান, এটা আমাদের দেখার বিষয় না। প্রধান কার্যালয় ভালো বলতে পারবেন। এমন বরাদ্দের খবর ছড়িয়ে পড়লে অফিস পাড়ায় শুরু হয়েছে তোলপাড়, সেই সাথে উঠেছে সমালোচনা ঝড়।

জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের মাধ্যমে ৪০০ পরিবারের মাঝে ২ টি করে ৮০০ ভেড়ী, দুটি করে ৮০০ ডেউ টিন, চারটি করে ১ হাজার ৬০০ টি সিমেন্টের খুটি ও ৫ টি করে ২ হাজার ফরমেট এবং কৃমি ও ভিটামিন ঔষুধ বিতরন করা হয়েছে। এতে সর্বমোট বরাদ্দ প্রায় ৬০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গেছে।

সুত্র মতে, যে সব ভেড়ী দেওয়া হয়েছে তা বর্তমান বাজারে একটি ভেড়ী সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা হবে কিনা সন্দেহ। তারপর প্রতি ভেড়ীর ১০ হাজার টাকা করে ধরা হলে ৮ লাখ টাকা হবে। ৪০০ পরিবারের মাঝে দুটি করে ডেউ টিন সর্বোচ্চ মুল্য ৫০০ টাকা পিচ হলে আসে ৪ লাখ টাকা, চারটি করে ১৬০০ সিমেন্টের খুটি দেওয়া হয়। একটি খুটির দাম ২০০ টাকা করে হলে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৪০০ পরিবারের মাঝে ৫ টি করে ফরমেট মোট ২ হাজার। একটি ফরমেটের দাম ৬০০ টাকা করে হলে ১২ লাখ টাকা।

সব মিলে ৩৯ লাখ টাকা হয়। তবে ভেড়ীর দাম খুব বেশি হলে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার করে হবে। একটি করে সিমেন্টের খুটি ঊর্ধ্বে ১৫০ টাকা পিচ। সবকিছু বাজারের দ্বিগুন মুল্য ধরেও ৬০ লাখ টাকা আসছে না। তাহলে এভাবেই মহামারির মধ্যে হরিলুট করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্প। যার কারনে সরকার পড়েছেন চরম বেকায়দায়। আর সরকারের শেষ সময়ে এসে লুটপাটের মহারথি চালিয়ে যাচ্ছেন আমলারা।

এক ভেড়ী ব্যবসায়ী জানান, যে সব ভেড়ী দেওয়া হয়েছে তার দাম ৩ হাজারও হবে কিনা সন্দেহ। তিনি সব কিছু হিসেব করে ঊর্ধ্বে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা খরচ হবে বলে নিশ্চিত করেন। কথায় আছে সরকারী মাল দরিয়া মে ঢাল। এভাবেই চলছে সবকিছু।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: বিল্লাল উদ্দিন জানান, আমরা শুধু বিতরন করেছে। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় সবকিছু কিনে দিয়েছে, আমরা বিতরন করেছি।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডক্টর জুলফিকার মো: আখতার হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান কার্যালয় থেকে এপ্রকল্প গ্রহন করেছে। বর্তমান বাজার অনুযায়ী ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার প্রকল্প কিভাবে ৬০ লাখ টাকা হয় জানতে চাইলে তিনিও জানান, এটা প্রধান কার্যালয়ের প্রকল্প।
বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচাল ডক্টর নজরুল ইসলামও একই ধরনের কথা বলেন।

প্রাণী সম্পপদ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ডক্টর মুনছুর মোহাম্মদ শাহজাদার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসব তো জেলা উপজেলার কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তবে আগামী রবিবারে অফিস সময়ে যোগাযোগ করলে বিস্তারিত জানানো হবে।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *