অল্পের জন্য রক্ষা পেলে মধুমতি ট্রেন: ভোগান্তি কমাতে ভেজা চট দিয়ে ট্রেন পারাপার

বিশেষ সংবাদ লীড

আব্দুল হামিদ মিঞা,বাঘা:
আবারও অল্পের জন্য দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলে যাত্রীবাহী মধুমতি ট্রেন। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেল স্টেশনের আউটার সিগনালের পূর্বে ঝিনা রেল বাজার সংগলœ এলাকায় রেল ভাঙা দেখতে পায় স্থানীয় আবু তাহের। এরপর পরই গোয়ালন্দঘাট থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী মধুমতি ট্রেনটি আসছিল। এ সময় স্থানীয়রা একত্রি হয়ে টর্চ লাইটের আলো জালিয়ে লাল কাপড় টার্গিয়ে দিলে ট্রেন থামিয়ে দেন পরিচালক রাজু আহম্মেদ। তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ভাঙাস্থানে ভেজা চট দিয়ে অবশেষে ট্রেনের গতি কমিয়ে পারাপার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে।

জানা যায়, বাঘা উপজেলার আড়ানী ঝিনা মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের আবু তাহের পোশাব ফিরতে রেল লাইনের ধারে যায়। এ সময় আড়ানী রেল স্টেশনের আউটার সিগনালের পূর্বে ঝিনা রেল বাজার সংগলœ এলাকায় প্রায় ৫ ফুট রেল ভাঙা দেখতে পান তিনি। এ ভাঙা দেখতে পেয়ে চেচামেচি শুরু করে। তাৎক্ষনিক জাহাঙ্গীর হোসেনে নামের আরেক ব্যাক্তি আসে। তারা এ সময় চেচামেচি শুরু করলে বাজারের অন্যরা এগিয়ে আসে। ইতিমধ্যে গোয়ালন্দঘাট থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী মধুমতি ট্রেনটি আসছিল। এ সময় স্থানীয়রা টর্চ লাইটের আলো জালিয়ে লাল কাপড় টানিয়ে দিলে ট্রেন থামিয়ে দেন। পরে রেল লাইনের মিস্ত্রিরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাঙাস্থানে ভেজা চট দিয়ে আস্তে আস্তে ট্রেন পার করে দেন।

এ বিষয়ে ট্রেনের পরিচালক রাজু আহম্মেদ বলেন, ট্রেন আসার আগে ভাঙা দেথতে পান এলাকাবাসী। তারা ট্রেন আসার সাথে সাথে টর্চের আলো জালিয়ে লাল কাপড় উচু করে চালককে দৃষ্টি আর্কষণ করেন। ট্রেন ঘটনাস্থলে থামিয়ে দিয়ে ভাঙাস্থান দেখি। তবে ট্রেন যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ভাঙাস্থানে ভেজা চট দিয়ে পার করা হয়। তবে দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করার জন্য রাজু আহম্মেদ সাংবাদিকদের মাধ্যমে ওই একাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

আড়ানীর রেল লাইনের মিস্ত্রি মকসেদ আলী বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত বুদ্ধিতে ট্রেনের গতি কমিয়ে দিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে পার করে দেয়া হয়। পরে রেল লাইন মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচল করছে।

এ বিষয়ে আবু তাহের বলেন, রেল লাইন ভাঙা দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে শুরু করি। এ সময় অন্যরা এগিয়ে এসে টর্চ লাইটের আলো জালিয়ে লাল কাপড় টানিয়ে ট্রেন থামিয়ে দেয়া হয়। তবে কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।

আড়ানী রেল স্টেশন মাষ্টার একরামুল হক বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে মধুমতি ট্রেন। তবে ট্রেনের সময়ের কোন বিপর্য্য হয়নি। যথা সময়ে ট্রেন চলাচল করেছে।

আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ঝিনা গ্রামের মেম্বর মাসুদ রানা বলেন,আমি এ সময় ঝিনা বাজারে ছিলাম। মানুষের চিৎকার শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রেল লাইন ভাঙা। তার পরপর মধুমতি ট্রেনটি চর্ট লাইটের আলো জালিয়ে লাল কাপড় উচু করে টানিয়ে ট্রেন থেমে দিয়ে রক্ষা করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, আড়ানী স্টেশনের ৪০০ মিটার পূর্ব দিকে ঝিনা রেলগেটে ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর সারাদেশে আলোচিত লাল মাফলার দিয়ে তেলবাহী ট্রেন থামিয়ে দেয় দুই শিশু শিহাব ও লিটন। তার ৫০০ মিটার পূর্বে আড়ানী রেল স্টেশনের আউটার সিগনালের পূর্বে দেড় বছর পর আবারও ঝিনা রেল বাজার সংগলœ এলাকায় রেল ভাঙা দেখতে পায় স্থানীয় আবু তাহের। ফলে যাত্রীবাহী মধুমতি ট্রেন থামিয়ে দিয়ে হাজার হাজার মানুষের পান বাচিয়ে দিলেন তিনি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *