শ্যালো মেশিনের শব্দ পেলেই কোমর পানিতে নামছেন তারা

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে মানুষের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। শ্যালো মেশিনের শব্দ পেলেই ত্রাণের খোঁজে নামছেন কোমর পানিতে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পানি উঠেছে। কোনো কাজকর্ম নেই। বাড়িঘর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

এক সপ্তাহ যাবত তারা পানিবন্দি হয়ে আছে পদ্মার চরের মানুষ। কোনো ইঞ্জিতচালিত শ্যালো মেশিনের শব্দ পেলেই নারী পুরুষরা এক বুক পানি পর্যন্ত নেমে আসছে, এই বুঝি ত্রাণ নিয়ে কেউ আসছে। এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে বৃহস্পতিবার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আতারপাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ড চৌমাদিয়া, ৩ নম্বর ওয়ার্ড দিয়াড়কাদিরপুর চরের মানুষের মধ্যে।

এই তিনটি ওয়ার্ডে পরিবার রয়েছে সাড়ে সাত শতাধিক। ভোটার রয়েছে প্রায় দুই হাজার ২০০। প্রতিটি বাড়িতে পানি উঠেছে। তারা গরু-ছাগল নিয়েও বেকায়দায় পড়েছেন। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কেউ কোনো ত্রাণ হিসেবে সহযোগিতা দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ১ নম্বর আতারপাড়া চরের আলাম ব্যাপারী, মোবা ব্যাপারী, বিলাতি হাবিল, ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের সালেহা বেগম, রেজাউল করিম, শফিক খাঁ, আমির খাঁ, আবেদা বেগম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াড়কাদিপুর চরের হালিম মন্ডল, লোকমান মন্ডল, আবু তাহের মৌল্লা, হেলাল মৌল্লা বলেন, আমরা এক সপ্তাহ যাবত পানিবন্দি হয়ে আছি। কেউ কোনো ত্রাণ হিসেবে সহযোগিতা করতে আসেনি। ইঞ্জিনচালিত শব্দ পেলেই মনে হয়, কেউ ত্রাণ নিয়ে আমাদের মাঝে আসছে। তাই এক বুক পানি মধ্যে এসে দেখছি।

এ বিষয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের মেম্বর আবদুর রহমান জানান, এই চরে পরিবার রয়েছে ২৭০টি। ভোটার রয়েছে প্রায় ৬০০। পরিবার রয়েছে ২০০ মতো। আমি মেম্বার হিসেবে কি করব। আমার কাছে তারা বারবার সহযোগিতার জন্য আসছেন। আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এখন পর্যন্ত পানিবন্দিদের কোনো সহযোগিতা দেওয়া হয়নি।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, শুধু ওই তিনটি ওয়ার্ডেই না, ১৫টি চরের প্রায় অর্ধেকের বেশি পরিবারের বাড়িতে পানি উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পর বরাদ্দ এসেছে। শুক্রবার সহায়তা প্রদান করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *