উত্তরাঞ্চলে ফের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি

জাতীয় বিশেষ সংবাদ লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: দেশের ভেতরে ও বাইরে উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি ফের অবনতি হয়েছে। একই সঙ্গে পদ্মার পানি কমতে শুরু করায় মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সোমবার (২২ জুলাই) ‘বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর অবস্থা’ নিয়ে এক প্রতিবেদনে সতর্কীকরণ কেন্দ্র এসব তথ্য জানিয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিও অবনতির দিতে যাচ্ছে বলে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা এবং ঢাকার চারপাশের নদ-নদী ছাড়া অন্যান্য সকল প্রধান নদ-নদীর পানি কমছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও ভারত আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং কাছাকাছি ভারতের আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি কমার ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়তে পারে।

তিনি আরও জানান, ব্ৰহ্মপুত্র নদের পানি সমতল, আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। তবে এ সময়ে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ও ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে ফের বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

পানি বাড়তে থাকায় উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে ওই এলাকার বিভিন্ন জনপথ ফের তলিয়ে গেছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আরিফুজ্জামান ভূইয়া।

সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার পানি শেরপুর-সিলেট, শেওলা ও অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে।

যমুনা নদীর পানি কমে ফুলছড়িতে ৬৮ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদে ৭৮ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ৫৫ সেন্টিমিটার, কাজিপুরে ৫৫ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জে ৫১ সেন্টিমিটার ও আরিচায় বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে, পদ্মা নদীর পারি গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকূল পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া তিতাসের পানি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেঘনার পানি চাঁদপুর, ঘাঘটের পানি গাইবান্ধা, আত্রাইয়ের পানি বাঘবাড়ি, ধলেশ্বরীর পানি এলাশিন এবং পুরনো ব্রহ্মপুত্রের পানি জামালপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে উপর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) দুর্বল থাকায় বৃষ্টি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বইছে। এখন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মৌসুমী বায়ু মোটামুটি সক্রিয় রয়েছে, দেশের অন্যত্র কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তবে আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আবহাওয়া বিভাগের হিসাব অনুযায়ী সোমবার (২২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রংপুরে, ১১০ মিলিমিটার।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *