রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডে আরসা জড়িত, দাবি জাতিসংঘের

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টার (প্রতিবেদক) টম অ্যান্ড্রুস দাবি করেছেন, কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন ও অপহরণে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ আছে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকায় জাতিসংঘ দপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় জাতিসংঘের প্রতিবেদক ট্রম অ্যান্ড্রুস বলেন, আরসার সদস্যদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ ও ভয়ভীতি দেখানোর ব্যাপারে আমি বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেয়েছি।

ট্রম অ্যান্ডরুস এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। রোহিঙ্গা শিবিরে আরসার উপস্থিতি নিয়ে প্রথম জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধি এমন মন্তব্য করলেন।

ট্রম অ্যান্ডরুসের এমন দাবির পর সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা তো বাংলাদেশে আরসা কখনো দেখিনি। উনি যদি চিহ্নিত করতে পারেন কোনটা আরসা, আমরা ওদের ধরে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেব। আরসা কারা, আমরা তা দেখতে চাই। আমরা উদ্বিগ্ন রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিয়ে। এ জন্য রোহিঙ্গা শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছি। যাতে কেউ অবাধে সেখানে ঢুকতে না পারে। তারা এটা অপছন্দ করেন। এটা খুব অদ্ভুত!’

গত সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ এবং পরের মাসে অন্য ছয় রোহিঙ্গা নেতা খুনের পর থেকে কক্সবাজারে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি) উপস্থিতির বিষয়টি জোরের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে। তারা আল ইয়াকিন নামেও পরিচিত।

গত শনিবারও উখিয়ার হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের একটি পরিত্যক্ত ঘরের মেঝে খুঁড়ে এক রোহিঙ্গা নেতার দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি প্রায় এক বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন।

কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আরসার উপস্থিতির বিষয়টি সাম্প্রতিক খুনের ঘটনা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমর্থক, রোহিঙ্গাদের পক্ষের শক্তি নয়। আরসা পাহাড়ি এলাকা পাড়ি দিয়ে শিবিরে এসে এসব অপতৎপরতায় জড়িত। হত্যা, হামলার ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে রাতের বেলায় এসে এরা এসব অপকর্মে যুক্ত হয়। আবার আরসার সঙ্গে স্থানীয় সন্ত্রাসীরাও জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরসহ কক্সবাজারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সুরক্ষিত করার স্বার্থেই এর সুরাহা হওয়া জরুরি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *