শাহজালাল বিমানবন্দরে অব্যবস্থাপনা কমেনি

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অব্যবস্থাপনা কমেনি। বিদেশে যাওয়ার সময় পিসিআর টেস্টের নামে চরম অব্যবস্থাপনা চলছে। এজন্য একজন যাত্রীকে ফ্লাইটের ৬ ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে উপস্থিত থাকতে হয়। অথচ বিশ্বের অন্যান্য এয়ারপোর্টে এই টেস্টে ১০ মিনিটের বেশি লাগছে না।

দুবাই এয়ারপোর্টে এই টেস্ট ৬ থেকে ১০ মিনিটে করা হয়। ইমিগ্রেশন করার আগেই রিপোর্ট চলে আসে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে। তারপর সিল দিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়। অথচ ঢাকায় ফেরার পর শুধু একটা স্বাস্থ্য ফরম জমা দেওয়ার জন্য ২-৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, পিসিআর টেস্টের সময় কাউন্টারে যারা থাকেন তারা বেশিরভাগ সময় টেলিফোনে ব্যস্ত থাকে। একটি ফোন এলে ১০-১৫ মিনিটের আগে ফোন রাখছে না। অহেতুক কথা বলছে। এ নিয়ে যাত্রীরা প্রতিবাদ করলেও ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। তারা কাউকে পরোয়া পর্যন্ত করছে না।

দেশে ঢুকতে বা দেশ ছাড়তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এখন অনেকেরই এমন ত্যক্ত অভিজ্ঞতা। দেশে ফিরেই বিমানবন্দরে চরম হয়রানির কথা বলছেন যাত্রীরা। শুধু বিদেশফেরত যাত্রীই নন, বিদেশ গমনের ক্ষেত্রেও যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

১০ ডিসেম্বর থেকে রাতের ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার কারণে মূলত এই ভোগান্তি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে বিমানবন্দরে প্রতিদিন ২৭টি এয়ারলাইনসের ১১০ থেকে ১২৮টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। এসব ফ্লাইটে দৈনিক ২০ হাজারের বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। কিন্তু গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে নিয়োজিত বিমানের পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জাম নেই। এ ছাড়া বিমানবন্দরে স্থানস্বল্পতা, বোর্ডিং ব্রিজ, বাস-ট্রলির স্বল্পতা, ইমিগ্রেশন ও হেলথ ডেস্কে লোকবলের অভাবে ধাপে ধাপে ভোগান্তি হচ্ছে যাত্রীদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে একটি ফ্লাইট দুপুর সোয়া ২টায় নামলেও লাগেজ পেতে বিকাল সোয়া ৪টা বেজে যায়। রিয়াদফেরত মো. মফিদুর নামে এক যাত্রী জানান, স্বাস্থ্য ডেস্ক ও ইমিগ্রেশন কাউন্টারেও চরম অব্যবস্থাপনা চলছে। ইমিগ্রেশনে লেগেছে ৪৫ মিনিট, লাগেজ পেতে লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। বিমান বাংলাদেশের ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বিমানের ভাড়াও বেশি। শুধু আসা নয়, যাওয়ার ক্ষেত্রেও সঠিক সময়ে গন্তব্যে ছেড়ে যেতে পারছে না অসংখ্য ফ্লাইট। এতে কানেক্টিং ফ্লাইটে অপেক্ষা ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে এক ঘণ্টার বেশি বিলম্ব হয়েছে ১৬টি ফ্লাইট, দুই ও তিন ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে দুটি ফ্লাইট এবং চার ঘণ্টার বেশি বিলম্ব হয়েছে সাতটি ফ্লাইটের।

যাত্রীদের মত, প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধা। কিন্তু বিমানবন্দরে তারা চরম অবহেলার শিকার হন। যারা ভিভিআইপি, তাদের এক মুহূর্তও কোথাও দাঁড়াতে হয় না। লাইন ভেঙে তাদের কাজ করে দেওয়া হয়। শুধু কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ালে এবং যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা আর একটু দ্রুত কাজ করা ও মানবিক হলেই এই সমস্যার সমাধান হবে।

বিমানের এমডি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘দিনের বেলায় অনেক ফ্লাইট নামছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা রাতারাতি বাড়ানো যায় না। দুদিন ধরে অনটাইম ডিপার্চার সম্ভব হচ্ছে। বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার এএইচএম তৌহিদ উল আহসান বলেন, ‘রাতে রানওয়ে আট ঘণ্টা বন্ধ থাকায় দিনে চাপ বেড়েছে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *