দেশের ভাগ্য নিয়ে যেন আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: দেশের ভাগ্য নিয়ে যেন আর কেউ কখনো ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনে আসা নানা প্রতিবন্ধকতা সাহস ও সততার সঙ্গে মোকাবেলা করার কথা তুলে ধরে এ নির্দেশনা দেন।

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বুলেট, বোমা, গোলা অনেক কিছুই তো মোকাবেলা করেছি, কাজেই ও নিয়ে চিন্তা করি না। কিন্তু দেশটাকে যেখানে নিয়ে এলাম, এই গতিটা যেন অব্যাহত থাকে, সেটাই চাই। চিন্তাটা সেখানেই যে- আবার যেন আমাদের পিছিয়ে যেতে না হয়।”

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ, সহযোগী সংগঠন ও আওয়ামী লীগকে সচেতন থাকতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আবার যেন কখনো ওই হায়েনার দল এসে এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।”

এ কথা মনে রাখার নির্দেশনা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, “এই কথাটা মনে রেখেই ছাত্রলীগ নিজেদেরকে সুসংগঠিত রাখবে। কারণ এই ছাত্ররাজনীতি থেকেই তো রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। কাজেই নিজেদেরকে নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে সেভাবেই কাজ করতে হবে।”

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তোমরা নিজেদেরকে সেইভাবেই গড়ে তুলবা, একটা আদর্শবান কর্মী হিসেবে। খেয়াল রাখবা, কোনো লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে না যেন যাও। নিজেকে শক্ত করে সততার পথে থেকে এগিয়ে যাবে, সংগঠনকে শক্তিশালী করবে, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করবে- সেইভাবে নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।”

শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংগঠনের মূলনীতি যথাযথভাবে মেনে চলতে বলেন এবং ‘প্রকৃত শিক্ষায়’ শিক্ষিত হওয়ার তাগিদ দেন।

মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ‘মাতৃভূমি কর্ণার’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি
মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ‘মাতৃভূমি কর্ণার’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

তিনি বলেন, অহেতুক অর্থের পেছনে না ছুটে মানুষের জন্য কাজ করাই একজন রাজনৈতিক নেতার কাজ, সেটা মাথায় রাখতে হবে।
ছাত্রলীগের একটি মূলমন্ত্র যে ‘শান্তি’, সে কথা ‍তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতা এদেশের মানুষের শান্তির জন্য, উন্নয়নের জন্য আত্মত্যাগ করে গেছেন। কাজেই ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে এই নীতিটা মেনে চলতে হবে যে আমাদের কোনো ছাত্র কখনো যেন বিভ্রান্ত না হয়, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত না হয়, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত না হয়।

“নিজেকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রেখে শান্তির পথে এগিয়ে গিয়ে দেশ যেন উন্নয়নের পথে চলতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। সেই শিক্ষা নিতে হবে।”

ছাত্রলীগের আরেক মূলমন্ত্র ‘প্রগতি’র প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বিজ্ঞানের নতুন নতুন উদ্ভাবন, প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবন; তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের এগোতে হবে।”

উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে। মানুষের কর্মক্ষমতা বা দক্ষতারও পরিবর্তন ঘটবে। কিন্তু তারই সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে।

“এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে এই দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার যে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। এবং কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে সেইভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে যেন আমরা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারি।”

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পাঠাগার সম্পাদক সৈয়দ ইমাম বাকেরের তত্ত্বাবধানে মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ছাত্রলীগের কার্যালয়ের ‘মাতৃভূমি কর্ণার’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

স্ব:বা/না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *