রাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পুলিশি হেফাজতে স্বামীসহ বন্ধু

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর গলায় ফাঁস অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিনোদপুরের ধরমপুরে অবস্থিত ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার

মৃতের সহপাঠীরা জানায়, ওই ছাত্রীর নাম মোছা. রিক্তা আক্তার (২১)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। রিক্তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে। স্বামীর সাথে ধরমপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। তার স্বামী আব্দুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের ছাত্র। তার বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে। উদ্ধারের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

রিক্তা খাতুনের কয়েকজন সহপাঠী জানান, তারা বিষয়টা জানামাত্র রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়েছিলেন। সে সময় তাদের সামনেই পুলিশ রিক্তার স্বামীকে কিছুটা জিজ্ঞাসাবাদ করে।

রিক্তার স্বামী জানান, কিছুদিন ধরে তার স্ত্রী অন্য একজনের সাথে ফেক ফেসবুক আইডি থেকে কথা বলত। বিষয়টা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলেও তাদের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এসময় রাগ করে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। সন্ধ্যার পরে বাড়ি ফিরে কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েন। এরপরে রাত বারোটার দিকে ঘুম দেখে উঠে দেখেন, তার স্ত্রী জানালার পাশে দাড়িয়ে আছে। তখনো না ঘুমিয়ে জানালার পাশে কি করছে জানতে চেয়ে স্ত্রীর কাছে এগিয়ে গিয়ে তিনি দেখেন, সে জানালার গ্রিলের সাথে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তখন, তিনি চিৎকার করে নিজেই ফাঁস থেকে তাকে খোলার চেষ্টা করেন। নিজে ফাঁস খুলতে না পেরে তিনি পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া তার বন্ধুকে ডাকেন। এরপরে ফাঁস থেকে খুলে সে এবং তার বন্ধু মিলে তার স্ত্রীকে নিয়ে রামেকে যান।

রামেকে পৌছানোর পরে কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, আগেই তার স্ত্রী মারা গেছেন।

আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের স্বামী ও স্বামীর বন্ধুকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। মৃতের ও তার স্বামীর মোবাইল ফোনও নিজেদের কাছে নিয়েছে পুলিশ।
বিষয়টিকে সন্দেহজনক হিসেবেই দেখছেন মৃতের সহপাঠীরা। শনিবার সকাল দশটায় মৃতের পোস্টমর্টেম হওয়ার কথা।

আইন বিভাগের সভাপতি হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, আমি রিক্তার মৃত্যুর বিষয়টা জেনে গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত হয়েছি। খবরটি জানার পরে রাতেই আমি হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলাম। এবিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করছি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, মৃতের স্বামী ও স্বামীর বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের হেফাজতে রেখেছি। মৃতের আত্মীয়-স্বজন আসার পরে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *