হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে কাউন্সিলর কবির সাংবাদিক সাগরের বাড়ির প্রবেশ মুখে জোরপূর্বক বেড়া দিয়েছে। সেই সাথে জায়গা নিয়ে আদালত মামলা ও ওসির কথায়ও কোন কাজ হচ্ছে না বলে জানায় সাংবাদিক সাগর।
নবীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর কবির মিয়ার খুঁটির জোর কোথায় তা নিয়েও এলাকায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই কবির গ্যাংয়ের কারণে দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সাংবাদিক সাগর এর পরিবার নিজ বসত ঘরে ডুকতে পারছেন না! বাড়ীর রাস্তার প্রবেশ পথে বাশেঁর বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সাগর ও তার পরিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সমাজপতি ও প্রশাসনের কাছে ধরণা দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছিল না। এতে, আটকে আছে সাগরের বাড়ীর নির্মাণ কাজও। শেষ পর্যন্ত নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ডালিম আহমদ, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিঠু, সাবেক প্যানেল মেয়র-১ এটি এম সালাম ও নবীগঞ্জ থানার বেশ কয়েকজন অফিসারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় ওসি সাংবাদিক সাগরের পরিবারের প্রতিবন্ধিকতার বিষয়টি পরিলক্ষিত হলে তিনি সাগরের পরিবারকে মানবিক কারনে বসত ঘরে প্রবেশের রাস্তা অপসারনের জন্য কাউন্সিলরকে অনুরোধ করেন। এতে কাউন্সিলর দু’দিনের সময় নেন। কিন্তু সপ্তাহ, দিন অতিবাহিত হলেও কাউন্সিলর কবির মিয়া সাগরের বাড়ীর প্রতিবন্ধিকতা রাস্তা দেন নি!
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার ছালামতপুর গ্রামের সৈয়দ উল্লার পুত্র কাউন্সিলর কবির মিয়া ও প্রতিবেশী মরহুম সোহরাব উল্লার পরিবারের সাথে বাড়ি সীমানা ও চলাচলের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিগত প্রায় ৫ বছর যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও চলছে। প্রায় ৪ বছর পুর্বে মরহুম ছুরাব উল্লার পুত্র সাংবাদিক সাগরসহ তার পরিবারের লোকজন প্রভাবশালী কাউন্সিলর ও তার পরিবারের লোকজনের অত্যাচার ও নির্যাতনের কারনে বসত বাড়ী পেলে অন্যস্থানে আত্মরক্ষা করেন।
দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সাংবাদিক সাগরের পরিবার পরিজন বাসা ভাড়া করে বসবাস করে আসছেন। নিজ গৃহে পরবাসীর মতো অবস্থা সাগরের পরিবারের। নিজের বাড়ি ঘর থাকার পরও অন্যত্র বাসা ভাড়া করে বসবাস করার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, প্রায় ৪ বছর ধরে খালি বাড়ি- ঘর থাকার সুবাধে ঘরের বাশঁপালাসহ মুল্যমান মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় কাউন্সিলরের লোকজন। এছাড়া সম্প্রতি সাংবাদিক সাগরের পরিবার রাস্তার প্রতিবন্ধিকতা অপসারনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে আদালত প্রতিবন্ধিকতা অপসারনের জন্য ওসি নবীগঞ্জকে আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাস্তার সীমানায় দেয়া বেড়া সরিয়ে প্রতিবন্ধিকতা দুর করার জন্য কাউন্সিলরকে অনুরুধ করেন। এতে কাউন্সিলর কোন তোয়াক্ষা করেন নি। এক পর্যায়ে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ ডালিম আহমদ সরজমিনে গিয়ে সাংবাদিক সাগর ও তার পরিবারের লোকজনকে তাদের বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করতে রাস্তার প্রতিবন্ধিকতা অপসারনের জন্য অনুরুধ করলে তিনি দু’ দিনের সময় নেন।
কিন্তু রির্পোট লেখা পর্যন্ত ৭ দিন অতিবাহিত হলেও কাউন্সিলর কবির মিয়া রাস্তার বেড়া অপসারন করেন নি। অভিযোগ আরো পাওয়া গেছে উক্ত কাউন্সিলর সাংবাদিক সাগরের বাড়ি- ঘর ও জায়গা জবর দখল করার পায়তারা করছেন। এছাড়া উক্ত কাউন্সিলর কবির মিয়ার বাড়ির সামনে ও আশপাশে সরকারের কোটি টাকার ভুমি রয়েছে যা কাউন্সিলরের দখলে। সরকারের অনুমতি ছাড়াই সরকারী কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপুর্বক দখল করে ভোগ করে আসছেন। এ সব দেখার যেন কেউ নেই!
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সাগর মিয়ার সাথে কথা হলে সে বলে, আমরা ৭০/৮০ বছর তারা ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছি। এখন এস রাস্তা প্রভাবশালী কাউন্সিলর কবির মিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে, আমরা চলাফিরা করতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর কবির মিয়া সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সাংবাদিক সাগরদের বাড়িতে ডুকতে দেয়া যাবে না। কারন, তাদের রাস্তা নাই। দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর ধরে তারা ওই বাড়ি থেকে কি ভাবে চলাফিরা করতো এমন একটি প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দিতে অনিহা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ ডালিম আহমদ বলেন, একজন জনপ্রতিনিধির কাছে এসব আশা করিনি। যা কাউন্সিলর কবির মিয়ার কাছে থেকে পেলাম। তিনি আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও কথা বলেন।
স্ব.বা/ম