সিনিয়র শিক্ষক হেনস্থায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ

রাজশাহী লীড শিক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পবা উপজেলার কর্নহার থানাধীন আফিনে পালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের  ক্লাশ রুমে স্কুল চলাকালীন সময়ে সিনিয়র এক শিক্ষককে প্রধাণ শিক্ষকের সামনে এক মহিলা হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনায় প্রধাণ শিক্ষক নিরব ভূমিকা পালন করায় তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন স্কুল কমিটি ও শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

গত সোমবার (২২ আগস্ট) বেলা ১২ টায় আফিনে পালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঐ দিন আনুমানিক ৩২ বছর বয়সী এক মহিলা অনুমতি ছাড়া সিনিয়র শিক্ষক আনোয়ারের ক্লাস চলাকালীন সময়ে অনুমতি ছাড়াই ক্লাসে ঢুকে। সিনিয়র শিক্ষক আনোয়ারের শার্টের কলার ধরে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দারের কাছে টেনে নিয়ে যায়। প্রধাণ শিক্ষকের সামনে সেই মহিলা সিনিয়র শিক্ষক আনোয়ারকে মারধর করে। সেই মারধরের সময় দাঁতও পড়েছে। ঐ মহিলা আনোয়ার মাস্টারের ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে বলে জানা গেছে।

চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেছে যে, জোর করে স্কুলের অফিস রুম থেকে আনোয়ার মাস্টারকে স্কুল থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এরপরও স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী কিছুই বলেননি বা বাঁধা প্রদান করেনি ঐ প্রধাণ শিক্ষক।

স্থানীয় সাধারণ মানুষ, অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা জানান, তারা হতাশ হয়ে পেড়েছেন। এ কেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ! যে, অফিস রুম থেকে , তাও আবার প্রধান শিক্ষকের সামনে থেকে তাঁর স্টাফকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যায়! তারপরেও কোন বাধা প্রদান বা প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি প্রধান শিক্ষক ।

তারা আরও জানান, প্রধান শিক্ষক যদি তার স্টাফকেই হেফাজত না করতে পারেন, তবে স্কুল চলাকালীন অবস্থায় যদি কোন ছাত্রীকে বখাটে ছেলেরা জোর করে তুলে নিয়ে যায় ?  তখন, প্রধাণ শিক্ষক ও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি কিছু করতে পারবে বা করবে?

এলাবাসীরা জানান, শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন করতে হবে এমন প্রধান শিক্ষক দরকার নাই । যার দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে কিছু নেই।

ঘটনা স্থলে গিয়ে আরো জানা যায় যে, এই প্রধান শিক্ষক বিগত ৮/৯ বছর যাবত এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন । এই রকম বহু অভিযোগ পাওয়া যায় যে তিনি তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অক্ষম।

এই বিষয়ে স্কুল কমেটির সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীকে প্রশ্ন করা হয়েছে।ঘটনাটি স্বীকার করেছেন যে, তাঁর সামনেই এই মহিলা মেরে আনোয়ার মাস্টারের একটি দাঁত ফেলে দিয়েছে। সেই সাথে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে।

ওই মহিলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে ঐ মহিলা আনোয়ার মাস্টারের ২য় স্ত্রী। তার প্রথম স্ত্রী মারা যায় । দুই মাস আগে তাদের বিয়ে হয়।

আনোয়ার মাস্টারকে এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি  বলেন, ঘটনাটি সত্য । তবে, কেন এমন হলো তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, স্কুল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে আরও মারধর করা হয়েছে তাঁকে। পরে, কৌশলে পালিয়ে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

এ বিষয়টি সিনিয়র মাস্টার আনোয়ার কর্ণহার থানার অফিসার ইনচার্জ ইসমাইল হোসেনকে অবগত করেছেন।

থানার ওসি জানিয়েছেন, ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *