বাঘায় ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন সাফ অনুর্ধ-১৭ খেলোয়াড় স্বপন, পেলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর নগদ টাকা উপহার

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি :  বাঘার কৃতি সন্তান সাফ অনুর্ধ’১৭ ফুটবল দলের খেলোয়াড় স্বপন হোসেনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ অনুর্ধ -১৭ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিতব্য “সাফ অ-১৭ চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২২” এর খেলায় গৌরবময় অংশগ্রহনে বাঘার গর্ব স্বপন হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের ওই সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। স্বপন হোসেন আগামীতে দেশের উদাহরণ হয়ে আরো বড় মাপের খেলোয়াড় হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সকলে প্রত্যাশা করেছেন ‘কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে, মুখে হাসি বুকে বল,তেজে ভরা মন,মানুষ হইতে হবে এই যার পণ’।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনার চত্বরে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি শারমিন আখতার।
অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষন সংবর্ধিত কৃতি খেলোয়াড় স্বপন হোসেন উল্লেখ যোগ্য মুহুর্তে স্মৃতিচারণ করে বলেন, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাইরের দেশে খেলার সুযোগ পেয়ে নিজেই গর্ব অনুভব করছি। খেলাধুলার চর্চা ও মান উন্নয়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, আমাদের দলের তথা আমার এই অর্জনকে দেশবাসি সহ বাঘাবাসিকে উৎসর্গ করছি। সকল ক্রীড়া সংগঠক, সংগঠন ও ক্রীড়া প্রেমী মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি আগামীতে দেশের জন্য যাতে আরো সম্মান অর্জন করতে পারেন, তার জন্য প্রানপ্রিয় বাঘাবাসির (জন্মভূমি)র কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
স্বপন হোসেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা দুলাল হোসেনের বড় ছেলে । সকলের প্রত্যাশা স্বপন হোসেন আগামীতে দেশের উদাহরণ হয়ে আরো বড় মাপের খেলোয়াড় হবে।
ক্রীড়া সংগঠক ও ধারাভাষ্যকার প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিঞার সঞ্চালনায়, ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক জাফর ইকবালের স্বাগত বক্তব্য শেষে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল,সহকারি কমিশনার (ভ’মি) জুয়েল আহমেদ, স্বপন হোসেনের পিতা দুলাল হোসেন,ইউপি চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ত’ফান,মেরাজুল ইসলাম,সাইফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম,কোচ আব্দুস সাত্তার,বিআরডিবি অফিসার ইমরান আলী, বাঘা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ক্রীড়ামোদি আব্দুল লতিফ মিঞা। উপস্থিত ছিলেন, অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,সরকারি দপ্তরের প্রধানগন,শিক্ষক,ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়া প্রেমী, সূধিবৃন্দ, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত স্বপন হোসেনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্মাননা ক্রেষ্ট ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করেন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা,উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক, সাবেক খেলোয়াড়,বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি,গেøাবাল কমিউিনিটি অরগানাইজেশন ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আব্দুল কাদের ভুট্টু।

উল্লেখ্য,কেশবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময়ে বিকেএসপিতে ভর্তির জন্য রাজশাহী স্টেডিয়ামে যান। বাংলাদেশ এলিড একাডেমী কর্তৃক বাছাই পর্বে টিকে যাওয়ার পরে ৬ মাস এর ক্যাম্পিং ট্রায়ালে খুলনায় বিকেএসপিতে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এখনো সেখানেই দশম শ্রেণীতে পড়া শোনা করছেন। মিড ফিলডার হিসেবে লেফট সাইডের খেলোয়াড় স্বপন হোসেন, মাগুরায় আসাদুজ্জামান ক্লাবে থার্ড ডিভিশনে খেলেছেন। এভাবে খেলতে খেলতে একসময় নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়ে বিকেএসপি ফুটবলে।স্বপন হোসেনের ভাষ্য মতে, বাংলাদেশ ক্রীড়া ডিরেক্টোর পলস মনি,কোচ সাবেক ফুটবলার রবিউল ইসলাম ও আবুল হোসেন মেহেদীর কাছে কৃতজ্ঞ তিনি।
ফুটবলই যেন ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান! ফুটবল নিয়েই মেতে থাকতো সারাক্ষন। অজপাড়াগাঁয়ের সেই স্বপন হোসেন, প্রতিদিন বিকেলে মাঠে হাজির হতো স্রেফ বল কুড়ানোর লোভে! ফুটবল খেলা দেখার জন্যই প্রচুর স্কুল কামাই করেছেন ! খেয়েছেন শিক্ষকদের কানমলাও। দুপুরের স্কুল বিরতিতে অন্যরা যখন খাবার-গল্প নিয়ে ব্যস্ত,স্বপন হোসেন তখন একাই বল নিয়ে মেতে উঠত ফুটবল খেলায়। ছেলের দুরন্তপনায় মা-বাবার ছিল নাভিশ্বাস! এর পরেও বাবার চাইতে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি মায়ের।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *