তানোরে খ তফসিলের জমি ক তফসিল দেখিয়ে চেক দিলেন নাজির 

রাজশাহী লীড

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে আদালতে মামলা বিচারাধীন ও খ তফসিলের জমিকে ক তফসিলে রুপান্তর এবং মৌজা কলম দিয়ে লিখে প্রতারনা করে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভূমি অফিসের সার্টিফিকেট সহকারী ফিরোজ কবির দামি জমির চেক দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কামারগা ইউনিয়ন(ইউপির) মাদারিপুর গ্রামে ঘটে রয়েছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। এঘটনায় ভুক্তভোগী মাদারিপুর গ্রামের অসহায় দরিদ্র কৃষক আব্দুল লতিফ দিং বাদী হয়ে প্রতারক মাদারিপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান পাইলটকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে গত সোমবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগেও চলতি বছরের অক্টোবর মাসে চেক বন্ধের জন্য সহকারী ভূমির নিকট অভিযোগ দেওয়া হলেও কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এসিল্যান্ড ট্রেনিংয়ে থাকার সুযোগে নবাগত সার্টিফিকেট সহকারী অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে প্রতারক পাইলটকে চেক দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। এখবর ছড়িয়ে পড়লে দরিদ্র কৃষক লতিফ দিংরা চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন। সেই সাথে ভূমি কর্তার এমন কান্ডে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার জনসাধারন, সেই সাথে উভয়ের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা গ্রামবাসির ।

জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউপির জমসেদপুর মৌজার অন্তর্ভুক্ত আরএস ২৫ নম্বর খতিয়ানে ১ নম্বর আরএস দাগে ১৭ শতাংশ ভিটা জমি রয়েছে। ওই জমিটি বিগত ১৯৬৪ সালে লতিপের দাদা ঝড়ু মন্ডল বিনিময় দলিল করেন। যার দলিল নম্বর ১৮১৮৩৬৪। তিনি মারা যাওয়ার পর ওয়ারিস সুত্রে লতিফ দিংরা ভোগ দখল করেন। কিন্তু দামি এই জায়গা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রতারক পাইলটকে চেক দিতে স¤প্রতি বদলি হওয়া নাজির সাহিনুর মরিয়া হয়ে পড়েন। কিন্তু দ্রæত বদলীর কারনে চেক দিতে পারেন নি। নাজির হিসেবে যোগদান করেন সাদিল, কিন্তু তাকে দায়িত্ব না দিয়ে দুমাস আগে সার্টিফিকেট সহকারী হিসেবে যোগ দিয়ে চলতি বছরের গত ৩০ নভেম্বর জমিটির চেক দেন ফিরোজ। অথচ যিনি নাজির হিসেবে গত ৬ মাস আগে যোগ দিলেও তাকে কোন দায়িত্ব এবং চেয়ার পর্যন্ত দেন নি বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। আবার ওই জমিটির বিরুদ্ধে পাইলট মামলা করলে রায় পায় লতিফ দিংরা। রায়ের পর পুনরায় আপিল করেন পাইলট, যা আদালতে বিচারাধীন।

সরেজমিনে ভূমি অফিসে গিয়ে সার্টিফিকেট সহকারী ফিরোজকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান, জমিটি ক তফসীলের এজন্য চেক দেওয়া হয়েছে। জমি ক তফসীলের না খ তফসীলের প্রশ্ন করা হলে গেজেট বের করে দেখান। গেজেটে ক তফসীল মৌজা মাদারিপুর কম্পিউটারে লিখা, তার পাশে কলম দিয়ে জমসেদ পুর মৌজা লিখা আছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি যেভাবে পেয়েছি চেক দিয়েছে। একই জমি কিভাবে ক ও খ গেজেটে যায় কিভাবে প্রশ্ন করা হলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে অর্পিত সম্পত্তির ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পরামর্শ দেয়। জমির চেক যাকে দিয়েছেন, সে আদালতে মামলা করেছিল রায় চেক দেওয়া ব্যক্তির বিরুদ্ধ এজন্য আপিল চলমান কিভাবে চেক দিলেন জানতে চাইলে একই কথা বলে এড়িয়ে যান।

নাজিরের চেয়ারে বসা ছিলেন সার্টিফিকেট সহকারী ফিরোজ। আর নাজির সাদিলের ভাগ্যে চেয়ার জুটেনি, তিনি ওই রুমে দাড়িয়ে ছিলেন, তার কাছে চেক দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কিছুই জানিনা।

লতিফ দিংরা জানান, আক্টোবর মাসে এসিল্যান্ডকে অভিযোগ দলিল মামলার কাগজ পত্র দেখানোর পর চেক দেওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু ফিরোজ নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখে চেক দেয়। আমাদেরকেও ফিরোজ বলে ক তফসীলের জমি। কিন্তু আমাদের কাছে গেজেট আছে এটা খ তফসীলের জমি। ফিরোজের এমব কথার জন্য গত সোমবার এডিসি অফিসে গিয়ে গেজেটে খ তফসীল মৌজা জমসেদ পুর। কিন্তু ফিরোজ খ তফসীলকে ক তফসীল, মাদারিপুর মৌজার জায়গায় কলম দিয়ে জমসেদ পুর মৌজা লিখে চেক দেয়। আবার পাইলট মামলা করার পর আমরা রায় পায়, সে আপিল করে, যা আদালতে বিচারাধীন। আমরা গরীব অসহায় এজন্য বিচার পাচ্ছিনা। এসিল্যান্ড স্যার সবকিছু শুনে দেখে চেক বন্ধ করে দিয়েছিল। ফিরোজ সবকিছু উপেক্ষা করে চেক দিয়েছেন। শুধু আমাদেরকে হয়রানি করার জন্যই একাজ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, আমি বাহিরে আছি, অফিসে গিয়ে অভিযোগ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *